সোমবার, ১০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

পুলিশ-বিজিবির ওপর হামলার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে জঙ্গিরা!

গ্রেফতার চারজন সাত দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা থেকে শনিবার সন্ধ্যায় নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ (সিটিআই)। তারা হলেন- অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র জসিমুল ইসলাম ওরফে জ্যাক, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার মারকাজুস সুন্নাহ আল ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক মো. আবদুল মুকিত, সিলেটের আল হিদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র মো. আমিনুল হক ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্র সজীব ইখতিয়ার। এ সময় তাদের কাছ থেকে ব্যাগ, চাপাতি, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। সিটিআই বলছে, জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের গ্রেফতার চার সদস্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) টহল টিম ও সিলেটের বিজিবির স্থাপনার ওপর ‘হামলার পরিকল্পনা’ করছিল। এজন্য তারা রেকিও করেছিল। তারা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করে বিস্ফোরক প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল। গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেফতারসহ তাদের অন্য সদস্যরা ‘সায়েন্স প্রজেক্ট’ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতেন। ইতিমধ্যে ১০ জন সদস্য ওই গ্রুপে যোগ দিয়েছেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল অক্সিজেন গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো। এ বিষয়টি তাদের পরিকল্পনা পর্যায়ে ছিল। তবে এই গ্রুপের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভিতর অনেক গোপন আলাপ আলোচনা হতো। ওই গ্রুপের দুজন সদস্য ইতিমধ্যে আফগানিস্তানে চলে গেছেন এবং বাকিরাও দেশে কোনো না কোনো নাশকতা ঘটিয়ে আফগানিস্তানে চলে যাওয়ার প্রস্তুতিতে ছিলেন। জঙ্গিরা হঠাৎ কেন বিজিবিকে নিশানা করল- এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান বলেন, জঙ্গিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের হামলার লক্ষ্য হিসেবে রেখেছে। এ দলের জঙ্গিদের আফগানিস্তানে ‘হিজরত’ করা নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আমাদের দেশে যে কটি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয়, তাদের বেশিরভাগই আল-কায়েদার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করে। আনসার আল ইসলাম উপমহাদেশের আল-কায়েদার শাখা বলে দাবি করে। সেই সূত্র ধরেই তারা হয়তো আফগানিস্তানে হিজরত করতে গিয়ে থাকতে পারে। তবে এটা তাদের ভাষ্য, এ বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। গ্রেফতাররা সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নাশকতামূলক কর্মকান্ড সম্পাদনের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোহাম্মদপুরে এসে একত্রিত হয়। আনসার আল ইসলামের দায়িত্বশীল বা মাসুল ফরিদ ওরফে তারিক আবদুল্লাহর সহযোগিতায় সামাজিক যোগাযোগ অ্যাপস গ্রুপ ও অনলাইনে গোপনীয় টেক্সট নামের সিক্রেট চ্যাটিং অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করত। সম্প্রতি গ্রেফতার জঙ্গিরা সংগঠনের নেতাদের নির্দেশে সিলেটের কোতোয়ালি থানা এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের ম্যানেজারকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করা হয়েছে।

 গতকাল ওই মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ-উর-রহমানের আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

সর্বশেষ খবর