সোমবার, ১০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বাহারি ফুলে রঙিন বরিশাল

রাহাত খান, বরিশাল

বাহারি ফুলে রঙিন বরিশাল

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপন্ন মানবজাতি। এর মধ্যে বৈশাখের কাঠফাটা রোদ। চলছে মাঝারি দাবদাহ। মানবকুলে ত্রাহী দশা। প্রাণীকুল ওষ্ঠাগত। মানব সভ্যতার চরম দুঃসময়েও মানসিক পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে বরিশাল নগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ফুটেছে মৌসুমি নানা বাহারি রঙের ফুল। অবিরাম সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে তারা। ফুলের আভায় পাল্টে যাওয়ার প্রত্যাশা নাগরিকদের। নদী থেকে বরিশাল নদী বন্দরের স্টিমার ঘাটের দিকে তাকালে সাময়িক স্বপ্নপুরী মনে হতে পারে। কীর্তনখোলার তীরে সারি সারি কৃষ্ণচূড়ায় ফুটে থাকা লাল ফুল সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। বঙ্গবন্ধু উদ্যান ও লেকের বিভিন্ন স্থানে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, রাঁধাচূড়া, জারুল ফুলের কম্বিনেশন সবাইকে বিমোহিত করে। নগরীর বাংলাবাজার-বটতলা পশু হাসপাতাল এলাকা, বিএম কলেজ ক্যাম্পাস, শেরেবাংলা মেডিকেল ক্যাম্পাস, বটতলা বাজারসহ নগরীর সর্বত্র ফুটে থাকা মৌসুমি বাহারি ফুল রাঙিয়ে দিচ্ছে পথচারীদের মন।

নগরীর হীম নীড় পুকুরে আগের মতো না হলেও আভা ছড়িয়েছে শে^তপদ্ম। পথচারী নাজমুস সাকিব বলেন, করোনার কারণে চারপাশে বিরূপ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৃতির পরিবর্তন এবং নানা ফুলের সৌন্দর্য আমাদের পরিবেশে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। দাবদাহের মধ্যে প্রকৃতির এই ছোঁয়া তাকে আরও প্রশমিত করছে।

পথিক হাসান মাহমুদ মলয় বলেন, করোনায় সবাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও আতঙ্কগ্রস্ত। এর মধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে ফুটে থাকা নানা রঙিন ফুল পথচারীর মনের খোরাক জোগাচ্ছে। মনকে আরও উৎফুল্ল করছে।

সরকারি কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, প্রকৃতি নবরূপে সেজেছে। চারদিকে ফুলের সমারোহ। ফুলের ঘ্রাণ নিতে পারছেন। মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন, পাখির কলতান শুনতে পারছেন। ফুলের সুবাসে করোনা হারিয়ে যাবে আশা করেন তিনি।

রমজানে ক্লান্ত অনেকেই কীর্তনখোলা নদী তীরসহ বিভিন্ন স্থানে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে সময় কাটান। পথচারীরা বলেন, করোনা মহামারী, তার ওপর আবার বিরূপ প্রকৃতি সব কিছু মিলিয়ে মানব সভ্যতা কঠিন দুঃসময়ে। সবাই আতঙ্কগ্রস্ত। এই সময়ে রাস্তার পাশের বিভিন্ন স্থানে ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্য তাদের বিমোহিত করে। মনের প্রশান্তি জোগায়। এখান থেকে পরিবেশ-প্রকৃতির প্রতি শিক্ষা নিতে হবে। ঘুরে দাঁড়াতে হবে নতুন করে।

নাগরিকদের মনের প্রশান্তির জন্য পরিকল্পিতভাবে মৌসুমি ফুলের গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উদীচী বরিশালের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান মিরন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. সুব্রত কুমার দাস বলেন, বৈশাখ থেকে আষাঢ় (মার্চ থেকে জুন) এই তিন মাস প্রকৃতি সৌন্দর্যের ডানা মেলে দেয়। এটা মাইন্ড গ্রোয়িং মৌসুম। মনের প্রশান্তি তৈরি করে। জনগণের মনের প্রশান্তি বাড়াতে পারলে আর্থিক-সামাজিক সব দিকেই সমাজ লাভবান হবে বলে মনে করেন তিনি। এ জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা, রাস্তার ধারে, বাড়ির সামনে সর্বত্র মৌসুমি ফুল গাছসহ ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর