শনিবার, ২২ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

কী থাকছে রাবির অবৈধ নিয়োগের তদন্ত প্রতিবেদনে

মর্তুজা নুর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

কী থাকছে রাবির অবৈধ নিয়োগের তদন্ত প্রতিবেদনে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ নিয়োগ কার্যক্রমে কারা জড়িত তা চিহ্নিত করতে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে। নিয়োগ বাতিল, বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও নিয়োগে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ড. মুহাম্মাদ আলমগীর বলেন, আমরা তদন্তের কাজ পুরোপুরি শেষ করেছি। দু-একদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। তদন্তে কী পেয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা মন্ত্রণালয়ই জানাবে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাম্প্রতিক নিয়োগে গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। সাবেক ভিসি অধ্যাপক আবদুস সোবহানসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিধি ভেঙে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। একাধিক সুবিধাভোগী এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা রেখেছেন। তাদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। সে কারণে নিয়োগ বাতিল, বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও নিয়োগে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করছে তদন্ত কমিটি। জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বায়োডাটা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ছাড়াই কেবল মুখ দেখে নিয়োগ দেওয়া হয় ১৩৮ জনকে। তাদের মধ্যে ১২৯ জনের কোনো কাগজপত্রই নেওয়া হয়নি। শুধু মুখ চিনে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করতে এসে মাত্র ৯ জনের জীবন-বৃত্তান্ত পেয়েছে কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে নানা অনিয়মের চিত্র। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় ৫ মে হুলুস্থুল করে, তারপর ৬ তারিখে সকালে সবাইকে ডেকে এনে ১৪১ জনের কথা বলা হলেও আমরা ১৩৮ জনের ডকুমেন্ট পেয়েছি। ১৩৮ জনের যে নিয়োগ দিয়েছে, মাত্র ৯ ব্যক্তির সিভি আমরা পেয়েছি। আর কারও কোনো ডকুমেন্টই পাইনি। তার মানে পুরো প্রক্রিয়াটিতেই একটি অস্বচ্ছ বিষয় কাজ করেছে। অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়াদের কাজে যোগদানের সুযোগ হবে না। ভিসিসহ যারা এই নিয়োগের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাব। উনার (উপাচার্য) সাক্ষাৎকার নিয়েছি। অনেক ব্যাপারে উনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। অনিয়মের একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তিনি বলেন, আমরা পুরো ফ্যাক্টটা তুলে ধরছি। এ ঘটনার সঙ্গে এরা সম্পৃক্ত, এদের দায়ভার রয়েছে। কিন্তু দায়ভারের জন্য তাদের শাস্তি কী হতে পারে, এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাবির প্রগতিশীল ও দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ তদন্ত কমিটিকে একটি নামের তালিকা দিয়েছে, যারা বিদায়ী উপাচার্যের পক্ষে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন বিদায়ী উপাচার্যের ভাগ্নে সাখাওয়াৎ হোসেন টুটুল ও ভায়রা আবদুল বারী। এ তালিকাতে উপাচার্য জামাতা ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) শিক্ষক এ টি এম শাহেদ পারভেজসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার নামও আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর