শনিবার, ২২ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
সাংবাদিক নেতাদের ঘোষণা

রোজিনা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কারাবন্দী রোজিনা ইসলাম মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে তারা বলেছেন, রোজিনা মুক্ত না হলে মুক্ত সাংবাদিকতার অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে পড়বে। ব্যক্তিগত তথ্য, ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করে সাংবাদিকদের ঐক্যে যাতে বিভেদ সৃষ্টি করা না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতেও বলেছেন তাঁরা। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন ও গ্রেফতারের ঘটনায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশের তৃতীয় দিন গতকাল এসব কথা বলেন সাংবাদিক নেতারা। বেলা সাড়ে ১১টায় আয়োজিত ওই সমাবেশে তাঁরা আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রোজিনা কলম ধরেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা সবাই জানতে চায়। দুর্নীতিবাজদের কারণে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বন্ধ হবে- তা মানা যায় না। রোজিনার জামিন এবং মামলা প্রত্যাহারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা। একইসঙ্গে রোজিনার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন তাঁরা। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউর সহসভাপতি ওসমান গণি বাবুল।

ডিআরইউ আলাদা তদন্ত করবে : ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন ব্যানারে সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে বিক্ষিপ্ত ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। যে ফোনালাপ ফাঁস করা হয়েছে তাতে এমন কোনো তথ্য নেই। রবিবার রোজিনা জামিন পেলেও ডিআরইউ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। প্রকৃত রহস্য জনসম্মুখে প্রকাশে ডিআরইউ আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করবে। যে কর্মকর্তারা রোজিনার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পরিবার মামলা না করলে ডিআরইউ করবে।

নিঃশর্ত মুক্তি দাবি ৮৩ বিশিষ্ট নাগরিকের : রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় তাঁকে জামিন ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৮৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, আমরা সরকারের কাছে অবিলম্বে এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার, রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি ও তাঁর ওপর নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনারও জোর দাবি করছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সুলতানা কামাল, হাফিজ উদ্দিন খান, রাশেদা কে চৌধুরী, হোসেন জিল্লুর রহমান, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহ্দীন মালিক, জেড আই খান পান্না, সারা হোসেন, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আলী রীয়াজ, স্বপন আদনান ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।

এ ছাড়া গতকালও সাংবাদিক রোজিনার মুক্তি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন কর্মসূচি পালন করেছে। এ দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে  কিশোরগঞ্জ নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ, পটুয়াখালী প্রেস ক্লাব, মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর প্রেস ক্লাব ও লৌহজং প্রেস ক্লাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর