মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে করোনা পরবর্তী জটিলতায় বাড়ছে মৃত্যু

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে করোনা পরবর্তী জটিলতায় বাড়ছে মৃত্যু

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে করোনা-পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় মৃত্যু। গত তিন দিনে করোনা-পরবর্তী জটিলতায় মারা গেছেন দুজন চিকিৎসক। তবে চট্টগ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা কমছে। জানা যায়, চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক প্রধান প্রফেসর ডা. ফরিদুল আলম (৬৮) এক মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। কিন্তু করোনা-পরবর্তী জটিলতায় গত রবিবার রাতে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে গত শুক্রবার রাতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরবর্তীতে নানা জটিলতায় ভোগে মারা যান বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সাবেক সভাপতি ডা. গোলাম মর্তুজা হারুন।

অন্যদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ মে মারা যান পাঁচজন, ২৮ মে চারজন, ২৬ মে দুজন, ২৫ মে চারজন ও ২৪ মে চারজন।  চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, কয়েক দিন ধরে  করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। তাছাড়া আক্রান্ত-পরবর্তী জটিলতায়ও মৃত্যু হচ্ছে। গত তিন দিনে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মারা যান। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের কনসালট্যান্ট ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের শরীরে ‘অ্যান্টিবডি উপস্থিতি নিয়ে ‘স্যারোপ্রিভিল্যান্স অব সার্স-২ কভিড-১৯ অ্যান্টিবডি ইন চিটাগাং, বাংলাদেশ : এ ক্রস-সেকশনাল স্টাডি’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ৫৭ শতাংশ রোগীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি নানা উপসর্গ বিদ্যমান থাকছে। এর মধ্যে শারীরিক দুর্বলতা, ব্যথা, দুুশ্চিন্তা, অবসাদ, কাশি ও চুল পড়ে যাওয়া। তবে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে। করোনা মানুষকে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতায় ফেলছে।   চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদা সুলতানা আফরোজা বলেন, ৯০ শতাংশ রোগীই মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আসছেন। আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম সপ্তাহে বাসায় বসে অক্সিজেন ও ইনজেকশনও ব্যবহার করে। দ্বিতীয় সপ্তাহে অবস্থা খারাপ হয়ে গেলেই হাসপাতালে আসেন। যখন আসেন তখন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পরও অনেক রোগীকে সুস্থ করা যায় না। রোগীর অবহেলা-অসচেতনতাই এর জন্য দায়ী।

 জানা যায়, চট্টগ্রামে গত রবিবার এক দিনে করোনায় আক্রান্ত হন ৮২ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৪৯ জন ও উপজেলায় ৩৩ জন। ওই দিন মারা গেছেন ৪ জন। গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হন ৫৩ হাজার ২৫১ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৪২ হাজার ৪৩৫ জন এবং উপজেলায় ১০ হাজার ৮১৬ জন। ইতিমধ্যে মোট মারা গেছেন ৬১৪ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৪৪২ জন ও উপজেলায় ১৭২ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ৮টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর