সোমবার, ৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
করোনাভাইরাস

সীমান্তে করোনার তাণ্ডব বাড়ছেই

অধিকাংশ মৃত্যু হাসপাতালে ভর্তির চার দিনের মধ্যে

শামীম আহমেদ

সীমান্তে করোনার তাণ্ডব বাড়ছেই

দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় করোনার তান্ডব বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় পশ্চিমের সীমান্তঘেঁষা রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা- তিন বিভাগেই সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ২০ শতাংশের ওপরে। উত্তর সীমান্তের ময়মনসিংহ বিভাগ ও উত্তর-পূর্ব সীমান্তের সিলেট বিভাগে শনাক্তের হার ছিল ১২ শতাংশের ওপরে। দক্ষিণ-পূর্বের বিভাগ চট্টগ্রামে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং সীমান্তের সঙ্গে সংযোগ না থাকা বরিশাল ও ঢাকা বিভাগে শনাক্তের হার ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে। এ ছাড়া সীমান্তবর্তী অনেক জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৪০ শতাংশের ওপরে। এদিকে অধিকাংশ মৃত্যু হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তির চার দিনের মধ্যে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৫ হাজার ৬১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে প্রতি ১০০টি নমুনা পরীক্ষায় রাজশাহী বিভাগে ২৫ দশমিক ১৯ জনের, রংপুর বিভাগে ২৩ দশমিক ৬৬ জনের, খুলনা বিভাগে ২১ দশমিক ৬৭ জনের, ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ দশমিক ৩৭ জনের, সিলেট বিভাগে ১৩ দশমিক ৮৯ জনের, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ দশমিক ৬৯ জনের, বরিশাল বিভাগে ৭ দশমিক ৫৮ জনের ও ঢাকা বিভাগে ৬ দশমিক শূন্য ৫ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে গত বছর সংক্রমণের শীর্ষে থাকা ঢাকা জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। অন্যদিকে সীমান্তবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪০ দশমিক ৬৯ শতাংশ, রাজশাহী জেলায় ৪০ শতাংশ, কুড়িগ্রামে ৪৫ শতাংশ, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬৩ শতাংশ, যশোরে ৪৬ শতাংশ ও ঝিনাইদহে ৩২ শতাংশ ছিল শনাক্তের হার। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

রাজশাহী : সাধারণ ওয়ার্ড করোনা ইউনিটে পরিণত করেও রোগীদের জায়গা হচ্ছে না রামেক হাসপাতালে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুততম সময়ে ১০০ বেডের একটি হাসপাতাল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তির চার দিনের মধ্যেই বেশির ভাগ রোগী মারা যাচ্ছেন। গত ২৯ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ৫৮ জন মারা গেছেন। মৃত ৫৮ জনের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন ভর্তির ছয় ঘণ্টার মধ্যে। ভর্তির তারিখেই মারা গেছেন আটজন। ভর্তির চার দিনের মধ্যে মারা গেছেন ৩৩ জন। ৫৮ জনের মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিলেন ৩৭ জন। বাকিরা মারা যান উপসর্গ নিয়ে। খুলনা : খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর জেলায় সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে খুলনায় ৭৬, বাগেরহাটে ৫৭ ও যশোরে ৪৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। খুলনা ও সাতক্ষীরায় করোনায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাতক্ষীরায় সাত দিনের লকডাউন, যশোর সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে বিজিবি মোতায়েন ও খুলনার চার থানায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

দিনাজপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

সাতক্ষীরা : গত বুধ ও বৃহস্পতিবার জেলায় করোনা শনাক্তের হার ছিল ৫৩ শতাংশের ওপরে। শনিবার কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৪৮ শতাংশে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শনিবার থেকে জেলায় সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৪২ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৪৭ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। উচ্চ সংক্রমণ হারের কারণে জেলায় দ্বিতীয় দফার লকডাউন চলছে।

রংপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে বিভাগের আট জেলায় ৩৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে করোনা কমিটির সভায় সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনে অঞ্চলভিত্তিক লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জয়পুরহাট : জয়পুরহাটে গত ১ জুন থেকে ৬ জুন পর্যন্ত ৫৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৮৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

মোংলা : বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় দ্রুত গতিতে সংক্রমণ বাড়ায় চলমান কঠোর বিধিনিষেধ রবিবার থেকে আরও ৭ দিন বাড়ানো হয়েছে। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মোংলায় শনাক্তের হার ৭০ শতাংশের আশপাশে রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর