সোমবার, ৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ডিসি বাংলোয় পাখির ভুবন

নেয়ামত হোসেন, চাঁদপুর

ডিসি বাংলোয় পাখির ভুবন

চাঁদপুরে ডিসির বাংলো পরিণত হয়েছে পাখির অভয়াশ্রমে। বাংলোজুড়ে রয়েছে বড় বড় গাছ, আর এসব গাছে বাস করছে বিভিন্ন প্রজাতির বক, পানকৌড়িসহ নানান জাতের পাখি। কোনো বিপদ-বাধা কিংবা নিরাপত্তার অভাব না থাকায় মহাসুখে এগুলো বসবাস করছে। পাখিপ্রেমিকরা জানান, এ স্থানটিকে পাখিরা নিরাপদ ভেবেই বছরের পর বছর বাসা বেঁধে নিশ্চিন্তে বসবাস করছে। স্থানীয় এক পথচারী সুজন আহমেদের কথায়, প্রথম দিকে এখানে চড়ুই, শালিকসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি থাকত। অন্যান্য পাখি কম এলেও পরে বিভিন্ন ধরনের বক আর পানকৌড়ি তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে স্থানটিকে বেছে নেয়। ডাক বাংলোর বাউন্ডারি এলাকায় আম, সেগুন, রেন্ট্রি, নারকেলসহ বিভিন্ন গাছে দুই যুগেরও অধিক সময় এভাবে বসবাস করছে শত শত পাখি। ফলে সকাল-সন্ধ্যা এখানকার পুরো এলাকা পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত থাকে। জানা গেছে, পাখিগুলো সুউচ্চ গাছগুলোতে বাসা তৈরি করে বংশ বিস্তার করে আসছে। এখান থেকে ১০০ মিটার দক্ষিণেই ডাকাতিয়া নদী। আশ্রয় নেওয়া পাখিগুলো দিনের বেলা ওই নদী ও আশপাশের বিভিন্ন জলাশয়ে গিয়ে খাবার খেয়ে, আবার বিকালে নীড়ে ফিরে আসে। সন্ধ্যার আগে ঝাঁকে ঝাঁকে পানকৌড়ি ও বকের দল উড়ে আসার দৃশ্য দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, এখানে বসবাস করা পাখিদের কেউই হয়রানি করে না।

যদিও পাখি ও তাদের বাচ্চাদের মলত্যাগ অনেক সময় পথচারীদের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তবে এনিয়ে কারও কোনো অভিযোগ নেই। বরং তারা একে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েই এপথে চলাফেরা করছেন।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সেলিম হোসেন বলেন, দুই বছর আগে মানুষের সমস্যার কথা চিন্তা করে গাছের ডাল কেটে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে পাখিরা সেই স্থানটি ত্যাগ করে যায়নি। তাই আমরা এটাকে সৌভাগ্যই বলব। পাখিরা যেহেতু এখানেই  থাকতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে, সে জন্য এ স্থানটি আমাদের আরও নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণীদের আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, পাখিরা এ বাংলো এলাকার গাছগুলোকে নিরাপদ অভয়াশ্রম মনে করায় আমি ধন্য। এখানে পাখিদের কলকাকুলি প্রকৃতির মাঝে অপার সৌন্দর্য এনে দিয়েছে। কেউ যাতে পাখিদের আবাসে বিঘ্ন সৃষ্টি না ঘটায়, সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য সব কর্মচারীদের বলে দেওয়া আছে। আমার এখানে পাখিরা ডিম পারার পর বাচ্চা ফুটিয়ে বংশ বৃদ্ধি ঘটায়। প্রাকৃতিক এ বিষয়টি ভেবে খুবই ভালো লাগে। বাংলোতে থাকাকালীন আমি পাখিদের নিয়ে খুবই এনজয় করি। চাঁদপুরবাসীও এ বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর