মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

তিতাসের ১০ কোটি টাকা বিল আত্মসাৎ, প্রতারক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার মিরপুরে গ্যাসের বিল দেওয়ার নামে দেড় সহস্র্রাধিক গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওমর ফারুক নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল রবিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করে। র‌্যাব বলছে, গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে মামলা হওয়ার পর থেকে পলাতক ছিলেন ফারুক। তবে হাতিয়ে নেওয়া ১০ কোটির বেশি টাকা ফারুক কোথায় রেখেছে তা এখনো জানাননি।

গতকাল বিকালে কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক মোজাম্মেল হক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টাকা কোথায় রেখেছেন তা বলেননি। তবে দেড় থেকে দুই বছর ধরে তিতাসের বিল জমা না হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

ওমর ফারুকের প্রতারণা সঙ্গে তিতাসের কেউ জড়িত কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, তার সহযোগী কয়েকজনের নাম পেয়েছি। আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দুই ভুক্তভোগী হৃদয় ও আক্তার মোল্লা জানান, প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ফারুক পালানোর পর তিতাস মাইকিং করেছে। এর আগে দেড় থেকে দুই বছর ধরে গ্রাহকদের বিল যে পরিশোধ হচ্ছে না, এ নিয়ে তিতাস কোনো শব্দ করেনি। পরে জানিয়েছে যে গ্রাহকদের বকেয়া রয়েছে।

র‌্যাব সিও মোজাম্মেল জানান, ফারুকের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ে মামলা হলে প্রতারণার টাকা কীভাবে কোথায় সরিয়েছে তা জানা যাবে। তবে প্রতারণার টাকা ফেরত পাওয়া কঠিন। যারা ভুক্তভোগী, তারা অনেকে মামলার বাদী হননি। তারা মামলায় প্রতিপক্ষ হলে সম্ভাবনা তৈরি হয়। ভুক্তভোগীদের মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে এমএলএম ও মোবাইল ব্যাংকিংও ছিল ফারুকের : ২০১৮ সাল থেকে ওমর ফারুক মিরপুর-২ এর ৬০ ফিট এলাকায় ‘ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স নামে একটি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় দেড় হাজার গ্রাহকের নিয়মিত গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের বিলের টাকা জমা নিতেন। এ সময় গ্রাহককে ব্যাংকের সিলসহ সংশ্লিষ্ট বিলের রশিদ সরবরাহ করতেন। যার বদৌলতে ধীরে ধীরে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেন। এলাকায় পরিচিত হয়ে ওঠায় পরবর্তীতে প্রায় দেড় হাজার গ্রাহকের তিতাস গ্যাস, ওয়াসা ও ডেসকোর বিলের জমা নিতেন। কিন্তু সেই টাকা সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা না দিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া ‘অটুট বন্ধন’ নামে তিনি একটি এমএলএম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। সমিতির মাধ্যমে জনগণকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ছাড়া প্রতারণার উদ্দেশ্যে বিকাশ, নগদ এবং অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতো বিল পরিশোধের জন্য ‘নব ক্যাশ’ নামের একটি সেবা চালু করেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর