শুক্রবার, ১১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সিলেটে পরীক্ষা করা হবে ৪২ হাজার ভবন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে দফায় দফায় হচ্ছে ভূমিকম্প। এতে বাড়ছে আতঙ্ক। আর আতঙ্কের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। এই ঝুঁকি হ্রাস ও বড় ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবার মহানগরীর ৪২ হাজার ভবন পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। এ জন্য নগরভবনের প্রকৌশলীদের পাশাপাশি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের পরমার্শ নেওয়া হবে। অধিক ঝুঁকিতে বন্ধ থাকা নগরীর ১০টি মার্কেট পর্যবেক্ষণে নেমেছেন শাবির বিশেষজ্ঞরা। সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২৬.৫ বর্গকিলোমিটারের সিলেট নগরীতে হোল্ডিংয়ের সংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার। এর মধ্যে ১ থেকে ২১ তলা পর্যন্ত বিল্ডিং রয়েছে ৪১ হাজার ৯৯৫টি। ২০১৯ সালে সার্ভে করে নগরীর ২৪টি বহুতল ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল সিটি করপোরেশন। ২৯ ও ৩০ মে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ দফা ভূমিকম্পের পর এই ২৪টি ভবনের মধ্যে ১০টি মার্কেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১০ দিন পর মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও গতকাল ১২ দিন পরও খোলেনি। গত সোমবার ১ মিনিটের ব্যবধানে আবারও দুই দফা ভূমিকম্প হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া মার্কেটগুলো খুলে দেওয়া থেকে বিরত থাকে। গতকাল সিটি করপোরেশন ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি টিম ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো পরিদর্শন করেছে।

 বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মতামত পাওয়ার পরই মার্কেটগুলো খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান। এদিকে, সিলেট নগরীতে প্রায় ৪২ হাজার ভবন থাকলেও কোনটির ভূমিকম্প সহনীয় ক্ষমতা কতটুকু তার কোনো তথ্য নেই নগরভবনে। তাই ভবনগুলো পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করতে চায় সিটি করপোরেশন। এ লক্ষ্যে বুধবার উভয় পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নগরীর নিরাপত্তা এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত ও করণীয় নির্ধারণে নগরভবনের পক্ষ থেকে শাবির সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও সহযোগিতা চাওয়া হয়। এতে শাবির বিশেষজ্ঞরাও সহযোগিতায় সম্মত হয়েছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, নগরীর ৪২ হাজার ভবন একসঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রকৌশলীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে হেলেপড়া, ক্র্যাক, জরাজীর্ণ ও অনুমোদিত ভবনগুলোর তালিকা করবেন। এরপর ওই তালিকা ধরে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা ভবনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এতে চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো সংস্কার করে ঝুঁকিমুক্ত করা না গেলে ভেঙে ফেলা হবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোনে রয়েছে সিলেট। দফায় দফায় ছোট ছোট ভূমিকম্প হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কোনো সময় বড় ভূমিকম্প হতে পারে। আর এরকম ভূমিকম্প হলে যাতে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায় সেজন্য নগরীর সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর