মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বেসরকারি শোধনাগারে তেল উৎপাদন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে গ্যাস ক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত কনডেনসেট (উপজাত) পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি শোধনাগারে। এসব শোধনাগারে কনডেনসেট থেকে উৎপাদিত তেল নিম্নমানের বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলো বন্ধ থাকায় প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে লোকসান। আর বিপরীতে মুনাফা ঘরে তুলছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সিলেটের জ্বালানি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে লাভবান করতেই পরিকল্পিতভাবে সিলেটের রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলো প্রায় ১০ মাস ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, সিলেটের গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের সঙ্গে উপজাত হিসেবে প্রচুর কনডেনসেট পাওয়া যায়। সিলেটে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ছয়টি শোধনাগারে পরিশোধন করে এ কনডেনসেট থেকে পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেন উৎপাদন করা হতো। এর মধ্যে প্রতিদিন গোলাপগঞ্জের রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)-এর দুটি প্লান্ট থেকে ৮০০ ও ৫০০ ব্যারেল, সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের আওতাধীন হরিপুরে ৬০ ব্যারেল, কৈলাসটিলায় ৩০০ ব্যারেল এবং রশিদপুরের দুটি প্লান্টে যথাক্রমে ৩ হাজার ৭৫০ ও ৪ হাজার ব্যারেল পেট্রোল, ডিজেল ও এলপিজি উৎপাদন হতো। কিন্তু বিএসটিআইর মানসম্পন্ন জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না এমন অজুহাতে গেল বছরের সেপ্টেম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয় সব কটি শোধনাগার। এর পর থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদনের জন্য সিলেট থেকে কনডেনসেট পাঠিয়ে দেওয়া হয় চট্টগ্রামের বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সিলেটে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এ অঞ্চলে দেখা দেয় জ্বালানি সংকট। চট্টগ্রাম থেকে রেলের ওয়াগনে তেল সরবরাহ করে সিলেটের চাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছিল না। ওয়াগন সংকট ও তেলবাহী ট্রেনের ঘন ঘন দুর্ঘটনায় ব্যাহত হয় তেল পরিবহন। এ অবস্থায় সিলেট বিভাগজুড়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিলে ১০ মার্চ সিলেট আসেন বিপিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দিক। তিনি সংস্কারের মাধ্যমে সিলেটের সব কটি শোধনাগার ফের চালুর আশ্বাস দেন।

কিন্তু গেল ১০ মাসে শুধু রশিদপুরের প্লান্টটি চালু হলেও বন্ধ রয়েছে বাকিগুলো।

রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলো চালু না হওয়ার কারণ জানতে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের লিকুইড পেট্রোলিয়াম মার্কেটিং ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর