শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
হোলি আর্টিজান হামলার পাঁচ বছর

শোক আর শ্রদ্ধায় স্মরণ নিহতদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

শোক আর শ্রদ্ধায় স্মরণ নিহতদের

হোলি আর্টিজানে হামলার পাঁচ বছর পার হয়েছে। ওই ঘটনায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে গতকাল ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

শোক আর শ্রদ্ধায় হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ করা হয়েছে। গতকাল গুলশান-২-এ নিহতদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। তবে করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে এবারও সাধারণ মানুষের সেখানে যাতায়াতে ছিল বিধিনিষেধ। হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর পূর্তিতে কয়েকটি দেশের কূটনীতিক ও পুলিশ-র‌্যাব কর্মকর্তারা শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছেন। গুলশান লেকের তীরে সেই দোতলা বাড়িটি সাজিয়ে তোলা হয়েছে নতুন করে, সামনের লন এখন আগের মতোই সবুজ। তবু পাঁচ বছর আগের ভয়ংকর এক রাতের স্মৃতি ঘিরে রেখেছে বাড়িটি; রক্তের দাগ আর বুলেটের ক্ষত রয়ে গেছে স্মৃতিপটে। গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর হোল্ডিংয়ের সে বাড়িতেই ছিল হোলি আর্টিজান বেকারি। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে সেখানেই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা ঘটেছিল। পাঁচ তরুণ জঙ্গি রোজার ঈদের এক সপ্তাহ আগে পিস্তল, সাব মেশিনগান আর ধারালো অস্ত্র হাতে ঢুকে পড়েছিল সেই ক্যাফেতে। তারা জবাই ও গুলি চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ভয়ংকর সেই রাতের শেষে কমান্ডো অভিযানে জঙ্গিদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে হোলি আর্টিজান সংকটের অবসান হয়। তবে বহু মানুষের হৃদয়ে রেখে গেছে গভীর ক্ষতচিহ্ন। হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর পূর্তির দিনে গতকাল গুলশান পুরাতন থানায় স্থাপিত নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এ সময় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলামসহ ডিএমপি ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা : করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গতকাল দেশে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। এ কারণে আগের দিন গত বুধবারই যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ভারতসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা হোলি আর্টিজানে গিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। গতকাল সকালে ও দুপুরে গিয়ে দুজন জাপানি নাগরিক ফুল দিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এদিকে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সিটিটিসি ভেঙে দিয়েছে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্যতম অধ্যায় হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা। হোলি আর্টিজানে ভয়াবহ এ জঙ্গি হামলা পরবর্তী সময়ে সিটিটিসির কল্যাণপুরে অপারেশন স্টর্ম-২৬, নারায়াণগঞ্জে হিট স্টর্ম, গাজীপুরের পাতারটেকে স্পেট-৮সহ ২৩টি হাইরিস্ক অপারেশনে ৬৩ জঙ্গি নিহত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এতগুলো সফল অভিযান পরিচালনা করা হয়। আইনশৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী কঠোর ভূমিকার কারণে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে আসার ফলে বড় কোনো ঘটনার খবর আমরা পাইনি। জঙ্গিদের এখন সক্ষমতা নেই বললেই চলে। তবে হোলি আর্টিজানের ভয়াবহ হামলার তদন্তভার সিটিটিসিকে দেওয়া হলে সিটিটিসি স্বল্পতম সময়ে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত সব সন্ত্রাসী, পরিকল্পনাকারী, অর্থ জোগানদাতাসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করে।

সর্বশেষ খবর