মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

হঠাৎ অস্থির খাতুনগঞ্জ

বেড়েছে পিঁয়াজ, রসুনসহ নিত্যপণ্যের দাম

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

হঠাৎ অস্থির খাতুনগঞ্জ

ঐহিত্যবাহী চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে হঠাৎ করেই অস্থির হয়ে উঠেছে পচনশীল মসলাপণ্যের বাজার। আসন্ন কোরবানির ঈদ, চলমান লকডাউন ও বর্ষা মৌসুমের কারণে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় পিঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম বেড়েছে। কোরবানির ঈদের আগে পর্যাপ্ত সরবরাহ না হলে দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠোর লকডাউন ঘোষণার আগেই পিঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম স্বাভাবিক ছিল। কঠোর লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পচনশীল পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খুচরা বাজারেও দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পিঁয়াজের দাম ৭ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গতকাল পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি পিঁয়াজের দাম ছিল ক্যাটাগরি ভেদে ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা। একই পিঁয়াজ খুচরা বাজারে ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে ছিল প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। ভারত থেকে পিঁয়াজ আনার ক্ষেত্রে আমদানিপত্র আইপি (ইম্পোর্ট পারমিট) বন্ধ থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। রসুন মানভেদে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। যা খুচরা বাজারে আরও ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পিঁয়াজ দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। নতুন করে পিঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানির যে অনুমতি ছিল, তার মেয়াদ গত ২৯ এপ্রিল শেষ হয়ে গেছে। এরপর আর নতুন করে পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়া যায়নি। অনেক আমদানিকারক আমদানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত অনুমতি পাননি। ভারতীয় পিঁয়াজ যতক্ষণ আমদানি হচ্ছে না ততক্ষণ দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানান তারা। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে পিঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। পিঁয়াজসহ বিভিন্ন পচনশীল পণ্যে দাম অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মিয়ানমার  থেকে সীমিত আকারে পিঁয়াজ আমদানি করছেন কিছু কিছু আমদানিকারক। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০ টাকার বেশি দামে। এক সপ্তাহ আগেও এ পিঁয়াজ ছিল কেজি প্রতি ৩০ টাকার কম।  খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, পিঁয়াজের দাম নির্ভর করে সরবরাহ চেইনের ওপর।

 করোনার কারণে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি বন্ধ। দেশি পিঁয়াজ দিয়ে সারা দেশে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বাজারে পণ্যের মজুদে ঘাটতি নেই। কঠোর লকডাউনের কারণে ক্রেতারা বাজারে আসতে পারছেন না। লকডাউনের পর থেকে পাইকারি ব্যবসা-বাণিজ্যে এক প্রকার ধস নেমেছে।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ঈদ বা অন্য কোনো মৌসুম আসার আগেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন।’ ভোক্তাদের একসঙ্গে অধিক পণ্য না কিনে কম করে নিত্যপণ্য ক্রয় করার পরামর্শ দেন তিনি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর