শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

তিল ঠাঁই নেই চট্টগ্রামের হাসপাতালে

করোনা এবং আইসিইউ ওয়ার্ডে সব বেড পূর্ণ * চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারের ৭০ শতাংশই করোনা পজিটিভ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

তিল ঠাঁই নেই চট্টগ্রামের হাসপাতালে

চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের করোনা এবং আইসিইউ ওয়ার্ডে কোনো শয্যাই খালি নেই। তাছাড়া চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারের ৭০ শতাংশ রোগীই করোনা পজিটিভ কিংবা উপসর্গের। প্রতিদিনই নতুন করে শনাক্ত হচ্ছে রেকর্ডসংখ্যক রোগী। ফলে হাসপাতালগুলোতে এখন করোনা রোগীতে টইটম্বুর, তিল ঠাঁই আর নাহিরে অবস্থা। পক্ষান্তরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সামাজিক মাধ্যমে সতর্ক ও সচেতনতামূলক পোস্টগুলো পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার বার্তা দিচ্ছে। জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রেড, গ্রিন ও ইয়েলো জোন মিলে শয্যা আছে ২০৬টি, জেনারেল হাসপাতালে আছে ১৫০টি, বিআইটিআইডিতে আছে ৩২টি এবং বেসরকারি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে আছে ১০৯টি, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে আছে ৫০টি, পার্কভিউ হাসপাতালে ৫৬টি, সিএসসিআরে ২৪টি ও ন্যাশনাল হাসপাতালে ৫৪টি। কিন্তু বর্তমানে প্রায় সবগুলো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা রোগীতে পূর্ণ। অন্যদিকে চট্টগ্রামে ছোট-বড় বেসরকারি হাসপাতাল আছে ৫০টি এবং রোগ নির্ণয় কেন্দ্র আছে প্রায় ৫৫টি। এসব কেন্দ্রে প্রতিদিন চেম্বার করেন প্রায় ১২০০ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল রোগীতে পূর্ণ। গত বুধবার এক দিনেই ৭১৩ জন আক্রান্ত ও ৯ জন মারা যান। তাই সবার প্রতি অনুরোধ, এবার একটু নিজের স্বার্থে হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ইউএসটিসির মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, প্রতিদিন ব্যক্তিগত চেম্বারে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী আসেন। গত এক সপ্তাহে আসা রোগীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই করোনা আক্রান্ত বা উপসর্গের রোগী। সুতরাং এখনই মানুষকে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়া জরুরি। না হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের কনসালট্যান্ট ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, করোনা আক্রান্তের হার ক্রমশই ঊর্ধ্বগতি। হাসপাতালে প্রতিদিনই শয্যার জন্য নানাভাবে টেলিফোন আসছে। কিন্তু শয্যা সংকট থাকলে আমরাও অসহায় হয়ে পড়ি। এখন দরকার স্বাস্থ্যবিধি মানা। মেট্রোপলিটন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, হাসপাতালের ৫০টি সাধারণ ও ৭টি আইসিইউ শয্যায় রোগী ভর্তি আছে।  তাছাড়া প্রতিদিন নতুন করে রোগী এলেও শয্যা সংকটে ভর্তি করা যাচ্ছে না। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ১১৯টি সাধারণ ও ১৬টি আইসিইউ শয্যার সবগুলোই রোগীতে ভর্তি। শয্যা খালি না থাকায় প্রতিদিনই রোগী ফেরত দিতে হচ্ছে।   জানা যায়, চট্টগ্রামে গত বুধবার এক দিনেই করোনায় আক্রান্ত হন ৭১৩ জন।   এর মধ্যে মহানগরে ৪৭৭ জন ও উপজেলায় ২৩৬  জন। ওই দিন মারা গেছেন ৯ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৭ জন ও উপজেলায় ২ জন। গত বুধবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হন ৬২ হাজার ৯১৩ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৪৮ হাজার ৭৭২ জন এবং উপজেলায় ১৪ হাজার ১৪০ জন। ইতিমধ্যে মোট মারা গেছেন ৭৪৪ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৪৮৬ জন ও উপজেলায় ২৫৮ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ৯টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর