শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

পজিটিভ রিপোর্ট এলেই ছাড়পত্র অক্সিজেন সংকটের শঙ্কা

সিলেটে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

পজিটিভ রিপোর্ট এলেই ছাড়পত্র অক্সিজেন সংকটের শঙ্কা

সিলেটে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষায় ৩ শতাধিক আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছেন। গেল ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে আক্রান্ত শনাক্তের হার ছিল ৪৮ শতাংশ। আক্রান্ত বাড়ার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে চিকিৎসা সংকট। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মিলছে না সিট। আর আইসিইউর সিটের জন্য চলছে হাহাকার। আইসিইউ সাপোর্টের অভাবে মারা যাচ্ছেন গুরুতর অসুস্থ রোগী। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা করছে। চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহের নিশ্চিয়তা না পাওয়ায় কভিড রোগীদের জন্য আইসিইউ বেড বাড়ানো যাচ্ছে না বলে দাবি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এ ছাড়া ‘সাসপেকটেড’ রোগী ভর্তির পর নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ এলে তাদের ছাড়পত্র ধরিয়ে দিচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো। অক্সিজেন সংকট, চিকিৎসার অপ্রতুলতা, আইসোলেশন ও আইসিইউ বেড খালি নেই- এমন নানা অজুহাতে তাদের ছাড়পত্র দিয়ে হাসপাতালে থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিলেটের ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে কভিড ডেডিকেটেড ঘোষণার পর সেখানে বসানো হয় ১০ হাজার লিটারের অক্সিজেন রিজার্ভার প্লান্ট। মে পর্যন্ত গড়ে দেড় থেকে ২ হাজার লিটার অক্সিজেনের চাহিদা ছিল হাসপাতালটিতে। কিন্তু জুন থেকে বাড়তে থাকে চাহিদা। জুলাইয়ে হাসপাতালটির প্রায় সব সিট রোগীতে পূর্ণ থাকায় অক্সিজেনের চাহিদাও বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। আগে যেখানে ছয়-সাত দিন পর ১০ হাজার লিটারের অক্সিজেন রিজার্ভার রিফিল করা হতো, এখন তিন দিন পর রিফিল করতে হচ্ছে।

শামসুদ্দিন হাসপাতালের মতো বেড়েছে সিলেটের সব কটি হাসপাতালে অক্সিজেনের চাহিদা। সিলেটের বেশির ভাগ হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করে লিন্ডা, স্পেকট্রা ও ফ্রেশ নামক প্রতিষ্ঠান। বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা ও বড় রিজার্ভার না থাকায় বড় সিলিন্ডার দিয়েই অক্সিজেন সংরক্ষণ করে সরবরাহ করতে হয়। ফলে অক্সিজেনের বাড়তি চাহিদা পূরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

জানা গেছে, সিলেটে কভিড রোগীদের জন্য ৮১টি আইসিইউ বেড রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি দুই হাসপাতালে ২৪ আর বেসরকারি সব হাসপাতাল মিলে ৫৭টি। পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালগুলোর আইসিইউর সব কটি বেড রোগীতে পূর্ণ। কেউ মারা গেলে বা সুস্থ হলে তার পরই সুযোগ পাচ্ছেন নতুন রোগী ভর্তির।

এদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় জেনারেল আইসিইউ বেড ও সিট খালি থাকলেও সেখানে কভিড রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না। কভিড চিকিৎসার জন্য বাড়ানো হচ্ছে না আইসিইউ বেড। এজন্য অক্সিজেন সংকটকে মূল প্রতিবন্ধকতা হিসেবেই চিহ্নিত করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট প্রাইভেট হসপিটালস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. নাসিম আহমদ জানান, চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহের নিশ্চয়তা কোথাও মিলছে না। নিশ্চয়তা পাওয়া গেলে সিলেটের বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় হয়তো আরও ২৫-৩০টি আইসিইউ বেড বাড়ানো যেত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর