বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
একনজরে

ওরা রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে ছিনতাই করে

নিজস্ব প্রতিবেদক

একজনের কোমরে পিস্তল। আরেকজনের হাতে ওয়াকিটকি। অন্যজনের হাতে হ্যান্ডকাফ। সবার পরনে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) স্টিকার লাগানো জ্যাকেট। এরা রাস্তায় চেকপোস্ট বসায়। দেখে মনে হবে পুলিশের দলটি খুব তৎপর। আদতে এরা কেউ পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নন। ডাকাতি-ছিনতাইয়ের উদ্দেশে ডিবি পুলিশের ছদ্মবেশ নেয়। এদের কাজ হলো চেকপোস্ট বসিয়ে ছিনতাই ডাকাতি করা। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলা শহরের নির্জন রাস্তা টার্গেট করে এরা চেকপোস্ট বসায়। মঙ্গলবার রাজধানীর বছিলা এলাকা থেকে এমন চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। তারা হলেন- মানিক ব্যাপারী ওরফে দারোগা মানিক, জাহিদ হাসান ওরফে রেজাউল, ফারুক হোসেন ওরফে নাসির উদ্দিন ও রুবেল সিকদার ওরফে রুস্তুম। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতার চারজন সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য।

 তারা ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাটে আগত ব্যাপারী ও ক্রেতাদের ডাকাতি-ছিনতাই করার পরিকল্পনা করছিল। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির নামে সর্বস্ব লুটে নিত।

যুগ্ম-কমিশনার হারুন আরও বলেন, এই চক্রের মূলহোতা হলো ‘মানিক দারোগা’। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি-ছিনতাই করার সময় সে টিম লিডার হিসেবে নিজেকে দারোগা বা সাব-ইন্সপেক্টর পরিচয় দিত। এ জন্য চক্রের সবাই তাকে মানিক দারোগা বলে ডাকে। এ চক্রের সদস্যরা একাধিকবার ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি-ছিনতাই করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু গ্রেফতারের পর কিছুদিন কারাগারে থাকলেও আদালতের মাধ্যমে জামিন নিয়ে বাইরে এসে আবারও একই কাজে লিপ্ত হতো তারা।

তিনি বলেন, ডিবি পুলিশ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সবসময় বা সব জায়গায় চেকপোস্ট বসায় না। পুলিশ পরিচয়ে কেউ তল্লাশি করতে চাইলে তার পরিচয় নিশ্চিত করার আহ্‌বান জানান তিনি। আশপাশে পোশাকে অন-ডিউটিতে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার কথাও বলেন তিনি।

ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, এই চক্রের একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে কে বেশি পরিমাণ টাকা তুলছে তা রেকি করে। গাজীপুরের ঘটনাটির আগে তাদের স্বাধীন নামে একজন সদস্য তিন দিন ওই ব্যাংকে গিয়ে ঘোরাঘুরি করেছে। কেউ বেশি পরিমাণ টাকা তুললেই মোবাইল ফোনে তাদের শারীরিক বর্ণনা বা পোশাকের রং বলে দেয় সহযোগী আরেকজনের কাছে।

সহযোগী চক্রের এক সদস্য দাঁড়িয়ে থাকে ব্যাংকের সামনে। চক্রের ওই সদস্য পিছু নেয় টাকা তুলে কর্মস্থল বা বাসায় ফেরা ব্যক্তির। তারপর চক্রের অপর সদস্যরা দ্রুত গাড়ি নিয়ে কোনো একটি নির্জন জায়গা বেছে নিয়ে চেকপোস্টের নামে তল্লাশি শুরু করে। এই চক্রের আরও বেশ কয়েকজন সদস্যের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর