শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলের পুত্রবধূর সংবাদ সম্মেলন

নাটের গুরু হাসান আরিফ দম্পতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গর্ভপাত, নারী নির্যাতন ও নাতনিকে মায়ের কাছ থেকে আলাদা রাখার অভিযোগ করেছেন তার পুত্রবধূ মাধবী আক্তার নীলা। বলেছেন, নাটের গুরু তার শ্বশুর-শাশুড়ি হাসান আরিফ দম্পতি। বাবা, মা এবং তাদের সন্তান মোয়াজ আরিফ মিলে দফায় দফায় তাকে নির্যাতন করেছেন। গতকাল মিরপুরের আরামবাগে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলের পুত্রবধূ।

সংবাদ সম্মেলনে মাধবী আক্তার নীলা বলেন, ‘এ এফ হাসান আরিফের ছেলে মোয়াজ আরিফের সঙ্গে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী-সন্তান নিয়ে আমি সুখেই ছিলাম। বর্তমানে আমার বড় মেয়ের বয়স দুই বছর। সুখের সংসারে সমস্যা শুরু হয় আমার বড় সন্তানকে নিয়ে। আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি আমার বড় মেয়েকে কানাডায় তাদের মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আমার ননদের কোনো সন্তান না থাকায় তারা আমার সন্তানকে কানাডা পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি রাজি হইনি। এর পরই আমার ওপর অত্যাচার, নির্যাতন শুরু হয়।’ নীলা বলেন, ‘আমি দুই সন্তানের জননী। তবে গত বছর অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় আমার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি নির্যাতনের একপর্যায়ে আমার পেটে লাথি মেরে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেন। পরে ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তিতে সহায়তা করে। সে সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার ডিএনসি করেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যেই আমি আবার তৃতীয়বারের মতো অর্থাৎ গত বছরের অক্টোবরে অন্তঃসত্ত্বা হই। তৃতীয়বারের মতো আমার অন্তঃসত্ত্বার খবর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি জানার পর পরই গর্ভপাত করতে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আমি কোনোভাবেই তাদের চাপের কাছে নতিস্বীকার করিনি। একপর্যায়ে তারা আমাকে বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতে জোর করেন। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় শ্বশুর-শাশুড়ির নির্দেশে আমাকে সেদিন অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন স্বামী মোয়াজ আরিফ। এ সময় আমি ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘এ এফ হাসান আরিফ সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল হওয়ায় আইনের অপব্যবহার করে নয় মাস অন্তঃসত্ত্বা থাকাবস্থায় আমাকে মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেন।

 আমার আইনজীবী জামিনের জন্য বারবার আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছেন। সবশেষ কারাগারে থাকা অবস্থায় গত মাসের প্রথম সপ্তাহে পুলিশ হেফাজতে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আমার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। পরদিন জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত জামিন মঞ্জুর করে। তারপর হাসপাতাল থেকে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে মাধবী আক্তার নীলা বলেন, ‘বর্তমানে আমার দুই বছরের সন্তানকে জোর করে আলাদা রেখেছেন তারা। আমি বারবার আমার সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও পারিনি। আমার দাবি সন্তান এখনো অনেক ছোট। যখন ও বুঝতে পারবে তখন তাকে নিয়ে যাক। এখন তো কথাও বলতে পারে না। আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেতে চাই। এ ছাড়া শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন থেকে মুক্তি চেয়ে স্বামী-সন্তানের সুখের সংসার ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইছি।’

এ বিষয়ে জানতে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর