সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
সিলেট-৩ আসনে উপনির্বাচন

বিএনপির ভোটের দিকে তিন প্রার্থীর নজর

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন ঘিরে তিন প্রার্থী এখন তুমুল প্রচারণায় ব্যস্ত। করোনা মহামারীর ভয়কে উড়িয়ে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন তারা। আরেক প্রার্থী কেবল নামেই নির্বাচনে, তার ন্যূনতম কোনো তৎপরতা ও প্রচারণা নেই। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা তিন প্রার্থীর সবাই বিএনপির নিজস্ব ভোটের দিকে চোখ রেখেছেন। উপনির্বাচনের প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী। বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া প্রার্থী হলেও তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। প্রার্থী হওয়ায় শফি চৌধুরীকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রচারণায় থাকা তিন প্রার্থী মনে করছেন, বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় তাদের কর্মী-সমর্থকদের ভোট আদায় করতে পারলে জয় সহজ হবে। অবশ্য বিএনপির নেতারা বলছেন, ‘প্রহসনের’ এসব নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।

আওয়ামী লীগের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যাওয়ায় সিলেট-৩ আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। আগামী ২৮ জুলাই এ উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সিলেট-৩ আসনে দুবার প্রার্থী হয়ে পরাজয় বরণ করেন জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক। শফি আহমেদ চৌধুরী এ আসনে দুবার বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব এবারই প্রথমবার কোনো নির্বাচনে লড়ছেন। গত ২৫ জুন প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই এ তিন প্রার্থী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গোটা নির্বাচনী এলাকায় দৌড়াচ্ছেন তারা। প্রতিদিন উঠান বৈঠক, কর্মী সমাবেশ, প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

হাবিব, আতিক ও শফির নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রচারণার শেষদিকে এসে বিএনপির ভোটব্যাংকের দিকে নজর দিয়েছেন তারা। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে, তাদের দলীয় প্রার্থীও নেই। ফলে দলটির কর্মী-সমর্থকদের নির্বাচনে টানতে তৎপর প্রার্থীরা।

সাধারণ ভোটারদের মতে, বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় আওয়ামী লীগের হাবিবের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু দলীয় বিভেদ তাকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। এ আসনে প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর স্ত্রী ফারজানা সামাদ দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে তিনি এখন নীরব। মাহমুদ উস সামাদের ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীরাও ভোটের মাঠে সরব নন। অন্যদিকে শফি চৌধুরী যদি বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের সহানুভূতি আদায় করতে পারেন, তবে লড়াইয়ে টেক্কা দিতে পারেন তিনিও।

তাদের মতে, জাতীয় পার্টির আতিক সম্ভাবনায় পিছিয়ে আছেন। সিলেটে বর্তমানে জাতীয় পার্টি আছে অস্তিত্বের শঙ্কায়। দলীয় কোন্দল প্রায়ই প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসে। এ উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা।

তবে জয়ের ব্যাপারে এ তিন প্রার্থীই ‘ব্যাপক সম্ভাবনার’ কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণমানুষের দল। মানুষের জন্যই আমাদের রাজনীতি। উন্নয়ন আর আওয়ামী লীগ এক সূত্রে গাঁথা। নৌকার পক্ষে গণজোয়ার দেখতে পাচ্ছি।’ শফি আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি নিজের চাওয়া-পাওয়ার জন্য নির্বাচনে লড়ছি না। নির্বাচনী এলাকা দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের জন্য কাজ করতে চাই। মানুষের দাবিতে আমি প্রার্থী হয়েছি। দলমত নির্বিশেষে সবাই আমার সঙ্গে আছেন।’ জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান বলেন, ‘মানুষের জন্য সবসময় কাজ করতে চাই। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ আমাকে ভালোবাসেন, সবাইকে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।’

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার। তিনি বলেন, ‘প্রহসনের নির্বাচনে আমরা নেই। নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রে যাবে না, নির্দেশনা দিয়েছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর