গেল বছর করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে রাজশাহীতে শনাক্তের হার ছিল খুবই কম। অথচ এ বছর একই সময়ের চিত্র ভীষণ শঙ্কা জাগানো। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হতে যাচ্ছে চলতি জুলাইয়ে। ২৩ দিনেই হাসপাতালটিতে মারা গেছেন ৪১১ জন। জুনে ছিল ৩৫৪ জন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে ২১, ফেব্রুয়ারিতে ২৯, মার্চে ৩১, এপ্রিলে ৭৯ ও মে-তে ১২৪ জনের মৃত্যু হয় করোনা ওয়ার্ডে। মৃত্যুর এ সংখ্যায় যুক্ত আছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার করোনা আক্রান্ত রোগীরা। আগামী আগস্টে করোনা পরিস্থিতি আগের সব হিসাব পাল্টে দিতে পারে- এ নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এফ এম এ জাহিদ বলেন, কোরবানির হাট নিয়ে যে শিথিলতা দেখানো হয়েছে, তার প্রভাব পড়বে। সংক্রমণ, শনাক্ত ও মৃত্যু দুই-ই বাড়বে আগস্টে। কারণ মানুষকে এখনো সচেতন করা যায়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে যে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল, তা করা যায়নি। আরেকজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, ‘মানুষের গাদাগাদি করে যে চলাচল, তাতে সংক্রমণ যে বাড়বে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। আগস্টেও মাসজুড়ে শনাক্ত ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি দেখব, আর দেখাটাই স্বাভাবিক।’জুলাইয়ে হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭০ জনের বেশি। ঈদ উদ্যাপনে মানুষের চলাচলের কারণে চাপের মুখে পড়তে পারে চিকিৎসা ব্যবস্থা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, তারা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখন তো সংক্রমণ ঘরে ঘরে ছড়িয়েছে। ঈদের পর রোগী বাড়তে পারে, আগাম প্রস্তুতি হিসেবে গত মঙ্গলবার ৪৫৪ শয্যার করোনা ইউনিটে আরও ৫৯টি বাড়িয়ে ৫১৩ শয্যা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ সংক্রমণের ধারা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হবে। সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানানোটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এটা করতে না পারলে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে যাবে। আমাদের সাইকে উদ্যোগী হয়ে এটা করতে হবে। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’