শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

অনিন্দ্য স্থাপত্যশৈলীর ১০ গম্বুজ মসজিদ

ফারুক আল শারাহ, লাকসাম

অনিন্দ্য স্থাপত্যশৈলীর ১০ গম্বুজ মসজিদ

অবদান আর অর্জনে মহীয়সী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পাশাপাশি নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য অবদান রেখে গেছেন তিনি। তাঁর নির্মিত স্থাপনাসমূহের মধ্যে লাকসামে ১০ গম্বুজবিশিষ্ট অনিন্দ্য স্থাপত্যশৈলীর মসজিদটি অন্যতম; যা ‘নওয়াববাড়ি মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত। নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী কুমিল্লার লাকসামে তাঁর জমিদারবাড়ির পাশে দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি দেখতে খুবই নান্দনিক। ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী এ মসজিদে মহিলাদেরও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখেন। মসজিদের ভিতরের দেয়াল, মিম্বর আর আজান দেওয়ার জায়গায় আছে দুই ধরনের টাইলসের কারুকাজ। সে সময়ের টাইলসগুলোও দৃষ্টিনন্দন। দেয়ালের ওপরের অংশের টাইলসগুলোয় রয়েছে গোলাপি, সাদা আর নীল রঙের কারুকাজ। আর নিচের দিকের টাইলসে হালকা শ্যাওলাসদৃশ সবুজ রঙের ডিজাইন। মসজিদের ছাদে রয়েছে ১০টি গম্বুজ। মাঝবরাবর রয়েছে বড় একটি গম্বুজ। এ গম্বুজের চারধারে মাইকগুলো লাগানো। বড় গম্বুজের চারপাশে আছে মোট নয়টি গম্বুজ। ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী মুসল্লিদের সুবিধার্থে একটি পুকুর খনন করেছিলেন। মসজিদের সামনেই শায়িত আছেন নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী ও তাঁর পরিবারের উত্তরসূরিরা।

মসজিদের দক্ষিণে ফয়জুন্নেছা পরিবারের পারিবারিক কবরস্থান। নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর ছোট মেয়ে বদরুন্নেছা চৌধুরানীর নিজ গ্রাম পশ্চিমগাঁওয়ে বিয়ে হওয়ায় তাঁর কবর মায়ের পাশেই হয়েছে। অন্য মেয়ে সৈয়দা আসাদুন্নেসা চৌধুরানীর হবিগঞ্জের জমিদারবাড়িতে বিয়ে হওয়ায় এখানে তাঁর কবর নেই। সৈয়দ শাহ আজহারুল হক, আলহাজ খানবাহাদুর সৈয়দ মুহাম্মদ গাজিউল হক, মোতাওয়াল্লি আলহাজ মৌলভি সৈয়দ সিরাজুল হক, সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল হক, সৈয়দা খাইরুন্নেসা বেগমসহ আরও কয়েকজনের কবর রয়েছে এখানে। প্রতিটি কবরফলকে নাম আর জন্ম-মৃত্যু সাল লেখা আছে।

লাকসাম নওয়াববাড়ি পরিদর্শনে আসা ভ্রমণপিপাসুদের অনেকে অনিন্দ্যসুন্দর এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন। অনেককে মসজিদটির ছবি ক্যামেরাবন্দি করতেও দেখা যায়।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘মহীয়সী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী নির্মিত ১০ গম্বুজ মসজিদটি খুবই সুন্দর। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর তাঁর বাড়িকে আকর্ষণীয় প্রত্নপর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এজন্য ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বাড়িটির পাশাপাশি মসজিদটিও আরও দৃষ্টিনন্দিত হবে।’

সর্বশেষ খবর