সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

লোভে পড়ে সোনার ক্যারিয়ার হচ্ছেন প্রবাসী শ্রমিকরা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

কম আয় করে এমন প্রবাসী শ্রমিক ও বেকারদের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে একের পর এক সোনার চালান নিয়ে আসছে ‘গোল্ড ডনরা’। তারা টার্গেট করা শ্রমিকদের ফ্রি টিকিট ও মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সোনা চোরাচালানের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের লোভে পড়ে অনেক প্রবাসী শ্রমিক জড়িয়ে পড়ছেন সোনা চোরাচালানে। ২০১৯ সালের দায়ের হওয়া একটি সোনা চোরাচালান মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে চট্টগ্রাম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরই মধ্যে এ চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে। তারা আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন। সিআইডির পুলিশ সুপার শাহ নেওয়াজ খালেদ বলেন, ‘২০১৯ সালের বিশেষ আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সোনা চোরাচালান চক্রের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য পাওয়া যায়। এরই মধ্যে এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’ মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ‘টিকিট ও নগদ অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে প্রবাসীদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সোনা পাচার চক্রের হোতারা। অনেক সময় ক্যারিয়ার জানেও না চালানে কী পরিমাণ সোনা রয়েছে। তারা লোভে পড়ে নিয়ে আসছে সোনার বড় বড় চালান।

 পরে ওই চালান নিয়ে বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে তুলে দেয় চক্রের দেশি প্রতিনিধিদের হাতে।’

জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আবর, ওমান ও কাতারভিত্তিক সোনা চোরাচালান চক্রের সদস্যরা বিশেষ কৌশল অবলম্বন করছে। তারা ওসব দেশে কর্মরত কম বেতনের শ্রমিক ও বেকারদের টার্গেট করে ফ্রি রিটার্ন বিমান টিকিট ও নগদ মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখায়। কেউ তাদের প্রস্তাবে রাজি হলেও তাদের মাধ্যমে পাঠানো হয় সোনার চালান। পরে ওই চালান বিমানবন্দরভিত্তিক এ চক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে বাইরে থাকা চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়। অভিন্ন কায়দায় চট্টগ্রামভিত্তিক সোনা চোরাচালান চক্রের সদস্যরা মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিয়ে আসছে একের পর এক চোলান।

২০১৯ সালে পতেঙ্গা থানায় দায়ের হওয়া মামলায় আলী আজগর আরিফ, মোক্তার হোসেন এবং রাজিবুল ইসলাম রাজুকে গ্রেফতার করে সিআইডি।  গ্রেফতারের পর তিনজনই আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। যার মধ্যে গত ৩১ জুলাই আদালতে জবানবন্দি দেন রাজু। তাতে তিনি উল্লেখ করেন- বিমানবন্দর কাস্টমসের চতুর্থ শ্রেণির কিছু কর্মচারীর মাধ্যমে সোনা চালান বাইরে নিয়ে আসা হয়। এ জন্য তাদের প্রতিটি বারে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়। বিমানবন্দর থেকে সোনার চালান বের হওয়ার পর তা সোনা চোরাচালান চক্রের প্রতিনিধির মাধ্যমে নগরের একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর