বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
‘গোসসা নিবারণী পার্ক’টির গোসসা ভাঙবে কবে

১০ মাসের কাজ শেষ হয়নি সাড়ে তিন বছরেও

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ওসমানী উদ্যানের ১০ মাসের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শেষ হয়নি সাড়ে তিন বছরেও। পার্কটির কাজের সার্বিক অগ্রগতি মাত্র ৬৫ শতাংশ। সাড়ে তিন বছর ধরে টিন আর কংক্রিটে আবদ্ধ উদ্যানটি। কবে কাজ শেষ হবে তাও স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এদিকে কাজের খুব ধীর গতির কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন নগরবাসী। তারা প্রশ্ন তুলছেন, ২০১৮ সালে নতুন করে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শুরুর আগে নাম দেওয়া ‘গোসসা নিবারণী পার্ক’ বা সহজ ভাষায় রাগ ভাঙানোর পার্কটির রাগ ভাঙবে কবে। এদিকে কাজের ধীরগতির কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স নামের ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, টেন্ডার বাতিলের জন্য আইনি মতামত চাওয়া হয়েছে। কার্যাদেশ বাতিল হলে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।  সরেজমিন দেখা যায়, প্রধান ফটক আটকে রেখে সামনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ’। চারদিকে টিন দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। কাজের ধীর গতির কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন নগরবাসী। তারা বলছেন, কয়েক বছর ধরে পার্কের নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে বলে চারদিক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কবে কাজ শেষ হবে, আর কবে এই পার্ক মানুষের রাগ ভাঙাবে তা কেউ বলতে পারে না।

জানা যায়, গুলিস্তান-সংলগ্ন আর সচিবালয়ের প্রধান ফটকের ঠিক উল্টো দিকে এবং ডিএসসিসি ভবনেরও ঠিক উল্টো দিকে অবস্থিত উদ্যানটিই ওসমানী উদ্যান। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ওসমানী উদ্যানের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। প্রায় ২৪ একর জায়গায় পার্কটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। নানান সমস্যায় জর্জরিত নাগরিকদের মন ভালো করে দিতে বা রাগ-গোসসা নিবারণ করতে নাম দেওয়া হয় ‘গোসসা নিবারণী পার্ক’।  কথা ছিল ১০ মাসে কাজ শেষে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে উদ্যানটি। বলা হয়েছিল, পার্কে আগতদের মন সতেজ রাখতে থাকবে জলের আধার, চা, কফি, স্যান্ডউইচ খাওয়ার ব্যবস্থা, বিশ্বকাপ বা অন্য কোনো খেলা দেখার জন্য থাকবে বড় কয়েকটি টিভি স্ক্রিন। জলাধারের পাশ থেকে ভেসে আসবে নতুন-পুরনো নানা সংগীত। অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উদ্যানটির দুটি জলাশয় সংস্কার করে সারা বছর পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা এবং সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উদ্যানের ভিতর স্বাধীনতা চত্বর, পাঠাগার, নগর জাদুঘর ও শিশু কর্নার নির্মাণ, সাউন্ড সিস্টেম যুক্ত করা, ফ্রি ওয়াইফাই জোন, টেবিলটেনিস, বিলিয়ার্ডসহ বিভিন্ন ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এখানে। ফুড কর্নার, ওষুধের দোকান এবং এটিএম বুথ বসানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। দ্য বিল্ডার্স লিমিটেড-এর অঞ্চল-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জয় জানান, কতভাগ কাজ শেষ হয়েছে সেটি কাগজপত্র দেখা ছাড়া বলতে পারব না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর