শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে লোকসানের মুখে আদা-রসুন ব্যবসায়ীরা

করোনা ও লকডাউনের কারণে ক্রেতা নেই পাইকারি বাজারে

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে লোকসানের মুখে আদা-রসুন ব্যবসায়ীরা

চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বড় লোকসানের মুখে পড়েছেন আদা-রসুনের ব্যবসায়ীরা। ক্রমাগত লকডাউনের কারণে নগরী ছাড়াও জেলার উপজেলাগুলোর পাইকারি ক্রেতা ব্যবসায়ীরা বাজারে আসতে পারছেন না। অন্যদিকে কোরবানির ঈদের পর আদা-রসুনের চাহিদা কমলেও সরবরাহ বেড়েছে। এ কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে আদা ও রসুনের দাম অস্বাভাবিক কমেছে। তবে আদা-রসুনের দাম কমে আসার কারণে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া অনেক আড়তদার দুই সপ্তাহ ধরে অবিক্রীত পচে যাওয়া আদা সড়কে ফেলেও দিয়েছেন বলে জানা গেছে। খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা সংক্রমণ রোধে কোরবানির ঈদের পর থেকেই টানা লকডাউন দিয়েছে সরকার। সর্বশেষ লকডাউন ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। লকডাউনের কারণে উপজেলা ও গ্রামাঞ্চল থেকে বড় ক্রেতারা পাইকারি বাজারে আসতে পারছেন না। তাছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা, হোটেল-মোটেল বন্ধ থাকায় আদা ও রসুনের চাহিদাও কমেছে। যার কারণে পণ্য দুটির প্রতি কেজিতে দাম অর্ধেক কমে গেছে। ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, প্রতি কেজি আদা আমদানিতে ব্যবসায়ীদের ১৩০ টাকা এবং রসুন আমদানি খরচ হয়েছে ১২০ টাকা। বর্তমান বাজারে রসুন ও আদা অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ক্রেতা না থাকায় পচনশীল এ দুটি পণ্য লোকসান হলেও কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। লকডাউন আরও বাড়ানো হলে আদা ও রসুন আমদানিতে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। খাতুনগঞ্জের কাঁচা মসলা পণ্য ব্যবসায়ী মো. আইয়ুব বলেন, ঈদকে ঘিরে আমদানিকারকরা কাঁচা মসলাপণ্যের আমদানি বৃদ্ধি করে। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেই অনুপাতে পণ্য বিক্রি না হওয়ায় আদা-রসুনের দাম নিম্নমুখী। এক মাস ধরে পণ্য দুটির দাম দফায় দফায় কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। মূলত ক্রেতারা পাইকারি বাজারে আসতে না পারা ও স্থানীয় পর্যায়ে চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম অস্বাভাবিক কমেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। খাতুনগঞ্জ কাঁচা মসলা পণ্যের (পিঁয়াজ, রসুন ও আদা) পাইকারি বাজার হামিদউল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, আদা ও রসুনের চাহিদা বাড়ে সামাজিক অনুষ্ঠান, হোটেল- রেস্তোরাঁ খোলা থাকলে। কিন্তু লকডাউনের কারণে হোটেল ও সামাজিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আদা-রসুনের চাহিদা কমে গেছে। লকডাউনের কারণে আমদানি হওয়া রসুন ও আদা বিক্রিতে কোটি কোটি টাকার লোকসান দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। জানা গেছে, কাঁচা মসলা পণ্যের মধ্যে দুই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি কমেছে আদার দাম। খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা দামে। যা কোরবানির আগেও ১৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। একই সময়ে প্রতি কেজি মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকার ওপরে। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। সে হিসেবে দুই মাসের ব্যবধানে আদার দাম কমেছে কেজিতে কমপক্ষে ৫০-৭৫ টাকা। এক মাসে কেজিতে ৬০-৬৫ টাকা কমেছে রসুনের দাম। বাজারে প্রতি কেজি চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭৮-৮০ টাকা দামে। এক মাস আগে ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক মাস আগে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা দামে। বর্তমানে ৪০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। রসুন কিছুদিন সংরক্ষণ করা গেলেও আদা দ্রুত পচনশীল হওয়ায় লোকসানের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি আদায়। অনেকে বিক্রি করতে না পারায় পচে যাওয়া আদা ফেলে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সর্বশেষ খবর