সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনার বিধিনিষেধেও কৌশলী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সিলেট-৩ আসনে উপনির্বাচন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

নির্বাচন কমিশন-ইসি আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন আয়োজনের অনুমতি পেয়েছে। তবে চলমান লকডাউনের কারণে রয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় বিধিনিষেধ। কিন্তু তারপরও থেমে নেই প্রার্থীরা। নানা কৌশলে বিধিনিষেধের বেড়াজাল ডিঙিয়ে তারা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।

সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী গত ১১ মার্চ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ফলে আসনটি শূন্য হয়। নব্বই দিনের মধ্যে এ আসনে উপনির্বাচনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। উপনির্বাচন আয়োজনে সময় বাড়ানো হয় আরও নব্বই দিন। ভোটগ্রহণের দিন ২৮ জুলাই নির্ধারণ করে ইসি। কিন্তু জুলাইয়ে দেশে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যে এ উপনির্বাচন আয়োজনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গত ২৬ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী ও নির্বাচনী এলাকার সাত ভোটার হাই কোর্টে রিট দায়ের করেন। আদালত উপনির্বাচন ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত রাখতে নির্দেশ দেয়। এরপর ৫ আগস্ট শুনানি শেষে আদালত ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইসি উপনির্বাচন করতে পারবে বলে আদেশ দেয়।

এই উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ইতিমধ্যেই শফি চৌধুরীকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া একেবারেই নিষ্ক্রিয়। নির্বাচন স্থগিতের পর মাঠে নেই শফি আহমেদ চৌধুরীও। তবে বিধিনিষেধের মধ্যেও অন্য দুই প্রার্থী নানা কৌশলী প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। হাবিব ও আতিক সমানতালে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার বিধিনিষেধের মধ্যে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বন্ধ থাকলেও প্রার্থীরা নানা অজুহাতে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। এলাকার কারও মৃত্যু হলে কর্মীবাহিনী নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন। অসুস্থ ব্যক্তিদের ‘খবর নেওয়ার’ অজুহাতে তাদের বাড়িতে হাজির হচ্ছেন। গত শনিবার মারা যান লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পীর ইকবালের মা। তার জানাজায় বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীসহ উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিব ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিক। শোকের মাস আগস্টকে কৌশলী প্রচারণায় কাজে লাগাচ্ছেন হাবিব। নির্বাচনী এলাকার ইউনিয়ন পর্যায়ে জাতীয় শোক দিবসের ধারাবাহিক কর্মসূচিতে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। গত শনিবারও তাকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে শোক দিবসের আলোচনায় অংশ নিতে দেখা গেছে। করোনার টিকাদানের বিষয়টিকেও প্রচারণায় কাজে লাগানো হচ্ছে। জাতীয় পার্টির আতিককে বিভিন্ন টিকাকেন্দ্র পরিদর্শনে যেতে দেখা গেছে। এসবের বাইরে প্রার্থীরা প্রতিদিন নামাজের সময় বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে হাজির হচ্ছেন, মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।

প্রচারণা প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘শোকের মাস আগস্টে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছি। তবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা থেকে বিরত রয়েছি।’

আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘টিকা কেন্দ্র পরিদর্শনসহ হাট-বাজারে গেলে মানুষের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি তাদের নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর