নওগাঁর আত্রাইয়ে গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে নদ-নদী, খাল-বিলে পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নৌকা তৈরি ও বিক্রির ধুম পড়ে গেছে। একে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকা তৈরির কারিগররা। নতুন নৌকা তৈরির পাশাপাশি পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজও চলছে। সম্প্রতি কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা মাছ ধরায় মেতে উঠেছেন। এসব কারণে কদর বেড়ে যাওয়ায় জমে উঠেছে নৌকা বিক্রির হাটগুলো। বিশেষ করে উপজেলার সমসপাড়া হাটে শুক্রবার ও সোমবার বিক্রি হচ্ছে শত শত নৌকা। নৌকা ক্রয়ে একদিকে সুফল পাচ্ছেন এলাকার পানিবন্দী মানুষ। অপরদিকে নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি। যেসব মিস্ত্রি বর্ষা মৌসুমে কাজের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকা তৈরিতে। সমসপাড়া হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা উপজেলার পারমহোনঘোষ গ্রামের আবদুল লতিফ, আবদুল মজিদসহ অনেকে বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। বর্ষায় আমাদের মাঠ ডুবে যাওয়ায় আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামে নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা নৌকা বিক্রির পেশায় নিয়োজিত হয়েছি। শুধু আত্রাই নয় রানীনগর, নাটোরের সিংড়া এবং চলনবিল এলাকার লোকজনও আমাদের নৌকা ক্রয় করতে আসেন। বর্তমানে কাঠ-বাঁশের দাম বেশি এবং মিস্ত্রির মজুরি বেশি হওয়ায় খুব বেশি লাভ না হলেও যা হয় তা দিয়ে সংসারের হাট-বাজার করা যায়।
উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের হালতি গ্রামের লোকমান মিস্ত্রি বলেন, বর্ষার পানি নদ-নদী ও খাল-বিলে প্রবেশ করার পর আমাদের এলাকায় নতুন নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামতের ধুম পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নৌকা তৈরি ও মেরামতের কাজ চলছে।
উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের নন্দনালী গ্রামের নৌকা তৈরির কারিগর নগেন, নরেশ ও নিতাই চন্দ্র বলেন, ৯-১০ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ১২-১৩ হাত নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় সাড়ে ৫-৬ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় ৭-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া কাঠের প্রকার ভেদে নৌকার দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। করোনাভাইরাসের কারণে হাট-বাজারে নৌকার ক্রেতারা কম আসেন। তাই নৌকা কেনাবেচা আর আগের মতো হয় না।