শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশি তারা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশি তারা

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার ৬ হাজার ২০০ হতদরিদ্র পরিবারে পৌঁছে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার পাঠানো উপহারসামগ্রী। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চরম কষ্টে দিনাতিপাত করা অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার ব্যক্তিগত তহবিলের এই সহায়তা। দুই উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ে গত বুধবার শুরু হয়ে গতকাল শুক্রবার শেষ হয় উপহারসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম। প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো খাদ্য সহায়তা পেয়ে উচ্ছ্বাস ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন উপকারভোগীরা। তারা বলেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে অনেকের উপার্জন নেই। বেকার হয়ে অনেকে শহর থেকে গ্রামে ফিরে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। খেয়ে না খেয়ে কোনোমতে তাদের দিন কাটছিল। অবশ্য করোনাকালীন কয়েক দফায় তারা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার। ফলে কষ্টের জীবনে অনেকখানি সহায় পেয়েছেন তারা। এবারও প্রধানমন্ত্রীর সেই ধারা অব্যাহত থাকায় খুশি তারা।

অন্যদিকে, উপহারসামগ্রী বিতরণে তদারকির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর এলাকার মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। এর আগেও বিভিন্ন দুর্যোগে বঙ্গবন্ধুকন্যা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন এমন একটি সময়ে এই উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়েছে, যখন টানা লকডাউনের কারণে মানুষের হাত খালি। ঘরে খাবার নেই। দরিদ্র, শ্রমিজীবী মানুষ কর্মহীন। এসব খেটেখাওয়া মানুষের দুবেলা দুমুঠো ভাতের নিশ্চিয়তা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে এসব খাদ্য সহায়তা দেন। খাদ্য সহায়তা পেয়ে এসব অসহায় ও দুস্থ মানুষ কয়েক দিনের জন্য হলেও খাবারের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের প্যাকেট হাতে পেয়ে হতদরিদ্রদের মুখে হাসি ফুটেছে। জানা গেছে, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই উপজেলায় এসব উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। পৌরসভা থেকে শুরু করে প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হয় এ সহায়তা। উপহারের প্রতিটি প্যাকেটে ছিল পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি করে আলু, ডাল, এক লিটার তেল, আধা কেজি লবণ ও এক কেজি চিনি। সঙ্গে দেওয়া হয় বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও শেখ কামালের ছবি সংবলিত পোস্টার। কোটালীপাড়ায় ৪ হাজার এবং টুঙ্গিপাড়ার দুই হাজার ২০০ পরিবারে এ সহায়তা পৌঁছায়। দরিদ্র পরিবারে এ সহায়তা পৌঁছে দিতে কাজ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা। কার্যক্রমের শেষ দিন গতকাল কোটালীপাড়ার রামশীল ও হিরণ ইউনিয়নে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। এ দুটি স্থানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, পৌর মেয়র হাজী মো. কামাল হোসেন শেখ, হিরণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরা, আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুজ্জামান খান বাদল, রুহুল আমিন খান, মিজানুর রহমান বুলবুল, রামশীল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খোকন বালা, রামশীল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামল কান্তি বিশ্বাস এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উপহারের প্যাকেট হাতে পেয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি গ্রামের ৭০ বছর বয়সী অমলা সরকার কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘বহুদিন হয়েছে স্বামী মারা গেছে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওরার পর একটি ঘরে আমি একাই বসবাস করে আসছি। খেয়ে না খেয়ে কোনোরকমে দিন পার করছিলাম। একপর্যায়ে ঘরে খাবার না থাকায় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের খাদ্যসামগ্রী পেয়েছি। আশীর্বাদ করি প্রধানমন্ত্রী যেন দীর্ঘজীবী হোন।’ পাটগাতি এলাকার ইজিবাইক চালক শাহিদুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের কারণে খুবই অসুবিধায় ছিলাম। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছিলাম। এ সময় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের সামনে ইজিবাইক চালকদের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আমরা এই উপহার পেয়ে খুবই খুশি ও উপকৃত হয়েছি। একই এলাকার চা দোকানদার অলিউর রহমান বলেন, চায়ের দোকানই আমার একমাত্র সম্বল। পরিবারের উপার্জন আমাকেই করতে হয়। একসময় হতাশা কাজ করে ছেলেমেয়ে নিয়ে কীভাবে চলব।  তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের খাদ্যসামগ্রী হাতে পেলাম। খাবারের ব্যাগটি হাতে পেয়ে খুব আনন্দিত পেয়েছি এবং শেখ হাসিনাকে দোয়া করেছি।  টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গওহরডাঙ্গা গ্রামের ভ্যানচালক হাফিজুর রহমান বলেন, উপার্জনের আশায় ভ্যান নিয়ে বাইরে বের হলেই পুলিশ ও প্রশাসনের বাধায় পড়তাম। ভ্যান নিয়ে বাইরে বের না হলে পরিবারের খাওয়া জোটে না। তখন প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের খাদ্যসামগ্রী পেয়েছি। খাদ্যসামগ্রী বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর স্ত্রী-সন্তানদের মুখে হাসি দেখেছি। সবাই মিলে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেছি। হে আল্লাহ আপনি নেত্রীকে অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর