শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

তিন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

♦ কুষ্টিয়া-হরিপুরে হুমকির মুখে সেতু ♦ রাজশাহীর পদ্মায় বাড়ছে পানি ♦ দিশাহারা নদীপাড়ের শত শত মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

তিস্তার পানি বাড়ায় ভাঙনের মুখে অসংখ্য বসতবাড়ি। ছবিটি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা থেকে তোলা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা, পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি। সুরমা ছাড়া দেশের সব প্রধান নদ-নদীতে পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তা অব্যাহত থাকবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি আরও বাড়তে পারে। নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। এদিকে রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। ডালিয়া সমতল স্টেশনে তিস্তা, গোয়ালন্দ সমতল স্টেশনে পদ্মা এবং কামারখালীতে গড়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর মাথুরা ও আরিচা পয়েন্টে এবং পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। গতকাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে এসব বলা হয়েছে। ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোয় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। গত দুই দিনে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হলেও গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে নদীর পানি বেড়ে ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে নদীর পাড়ে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।  এর আগে বুধবার বিকালে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়। একদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি, অন্যদিকে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে দিশাহারা জেলার সিন্দুনা, মহিষখোছা ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নদীপাড়ের শত শত মানুষ। ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন বসতবাড়ি। বিশেষ করে শেষ সম্বল আবাদি জমি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় সবকিছু হারিয়ে দিশাহারা মানুষজন।

বাঁধে আবারও ধস, হুমকির মুখে সেতু : শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতু রক্ষা বাঁধে ধস অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সেতু রক্ষা বাঁধের ধসে পড়া অংশ থেকে আবারও ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের কারণে বুধবার রাতে নদী তীরবর্তী দুটি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। ভয়ে এবং আতঙ্কে বুধবার রাতেই নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা তাদের বাড়ি-ঘরের অংশ খুলে নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পানির নিচ থেকে বুদবুদ উঠতে দেখা যায়। শুরু হয় ভাঙন। এতে নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। রাজশাহীর পদ্মা নদীতে হু হু করে পানি বাড়ছে। রাজশাহীতে পদ্মার বিপৎসীমা হচ্ছে ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা মাপা হয়েছে ১৭ দশমিক ৭৯ মিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বর্তমানে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর