খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২১ জেলায় বিদ্যুতের ৩৩/১১ উপকেন্দ্রে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোল্টেজ লোড, ফিডার চালু-বন্ধ করার প্রতিবেদন লগ বইতে লিপিবদ্ধ করা হয়। একজন সুইস বোর্ড কর্মীকে ৩৩/১১ কেভি সার্কিট ব্রেকারের সামনে বসে বিদ্যুৎ চালু ও বন্ধ করতে হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় তথ্য লেজার (লগবই) থেকে বের করতে সময় ব্যয় করতে হয়।
এ অবস্থার নিরসনে খুলনার ওজোপাডিকো (ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড) জোড়োগেট উপকেন্দ্রে পরীক্ষামূলক ‘লো কস্ট সাবস্টেশন অটোমেশন সিস্টেম উইথ স্কাডা’ চালু করা হয়েছে। এতে উপকেন্দ্রের প্রতি মুহূর্তের তথ্য কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষণ, স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ বিচ্যুতি প্রতিবেদন তৈরি ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে উপকেন্দ্রের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা যায়। নিজস্ব প্রযুক্তিতে অটোমেশন সিস্টেম তৈরি হওয়ায় স্বল্প খরচে তা উপকেন্দ্রে স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
ওজোপাডিকো কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন শাখার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কল্যাণ কুমার দেবনাথ জানান, প্রচলিত ম্যানুয়েল লগবইতে সংরক্ষিত তথ্যসমূহ ভবিষ্যতের পরিকল্পনা বিশ্লেষণধর্মী কাজে সহায়ক নয়।এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে উপকেন্দ্রগুলোর সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা যায় না। এ কারণে দেশীয় প্রযুক্তিতে উদ্ভাবনের এই ধারণাকে কাজে লাগানো হয়েছে। এতে কম্পিউটারের বাটন টিপে ডেস্কে বসে ব্রেকার চালু বা বন্ধ করা যায়। তিনি বলেন, অটোমেশন সিস্টেমের প্রযুক্তি বিদেশি আমদানি নির্ভর হওয়ায় তা ব্যয়বহুল এবং রক্ষণাবেক্ষণে বিদেশি প্রকৌশলীর ওপর নির্ভরশীল হতে হতো। কিন্তু দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারে অল্প খরচে এটা করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র মনিটরিংয়ে ‘লো কস্ট সাবস্টেশন অটোমেশন সিস্টেম উইথ স্কাডা’ প্রযুক্তি সাড়া ফেলেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত ‘ইনোভেশন শোকেচিং ২০২১’ প্রতিযোগিতায় এ প্রযুক্তি তৈরি করায় ওজোপাডিকো দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাবিবুর রহমান। পুরস্কার গ্রহণ করেন ওজোপাডিকো ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতি. দায়িত্ব) রতন কুমার দেবনাথ।