বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কিট সংকটে রাজশাহী বন্ধ টেস্ট

বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রগুলোর আগ্রহ থাকলেও পরীক্ষা করতে পারছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

কিট সংকটে রাজশাহীতে বন্ধ আছে করোনার র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা। সবশেষ রবিবার রাজশাহীতে ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এ পদ্ধতিতে। সোমবার থেকে আর কোথাও পরীক্ষা করা হয়নি। রাজশাহী মহানগরীর ১৩ পয়েন্টে অস্থায়ী বুথে এ পরীক্ষা করা হতো। এদিকে রাজশাহীতে র‌্যাপিড টেস্টের সরকারি উদ্যোগ বন্ধ হয়ে গেলেও বেসরকারি কোনো রোগ নির্ণয় কেন্দ্র পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অনুমতি পায়নি। ফলে আগ্রহ থাকলেও বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রগুলো র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে পারছে না। রাজশাহী ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. আবদুল মান্নান বলেন, ‘রাজশাহীর প্রথম সারির অন্তত ১৫টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার করোনার র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে আগ্রহী। কিন্তু সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে অনুমতি পাওয়া যায়নি।’ তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। শুধু রাজশাহীতেই হয়নি। দেশে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শাখা ২৬টি। এর ২৫টিতেই র‌্যাপিড টেস্ট হচ্ছে। শুধু রাজশাহীর শাখাতেই হচ্ছে না। রাজশাহীতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা না হওয়ার কারণও জানালেন ডা. আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, রাজশাহীর সব বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। লাইসেন্স নবায়নের জন্য মালিকরা আবেদনও করে রেখেছেন। সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখন সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। তারপর লাইসেন্স নবায়ন করা হবে। কিন্তু দুই বছর ধরে এ পরিদর্শন হয়নি। বর্তমান সিভিল সার্জন, আগের সিভিল সার্জন- কেউই সময় পাননি। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘আমরা টিম গঠনের চেষ্টা করছি। তারপর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করা হবে। লাইসেন্স নবায়ন হলে করোনার টেস্ট করারও অনুমতি দেওয়া হবে। এখন আমাদের কিট সংকট বলে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে পারছি না।’ গত জুনে রাজশাহীতে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনার সংক্রমণের হার উঠে যায় ৫০ শতাংশের ওপরে।

 তখন অধিকসংখ্যক আক্রান্ত মানুষকে দ্রুত সময়ে শনাক্ত করতে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ৬ জুন মহানগরীতে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়। প্রথমে পাঁচটি বুথ থাকলেও পরে বাড়িয়ে ১৩টি করা হয়। এতে রবিবার পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৭৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৫৪৯ জন।

প্রথম দিকে যিনিই যেতেন তারই নমুনা পরীক্ষা করে ১০ মিনিটের মধ্যে ফল জানানো হতো। সম্প্রতি কিটের সংকট দেখা দিলে শুধু উপসর্গ থাকলে এবং বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হতো। কম বয়সী ও উপসর্গ না থাকলে অনেককেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে পাঁচজন শনাক্ত হয়েছেন। সোমবার থেকে এ টেস্ট পুরোপুরি বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘সিভিল সার্জন অফিস থেকে আমরা ৭০০-৮০০ করে কিট পেতাম। তা দিয়ে কয়েকদিন পরীক্ষা করতাম। সবশেষ ৭৫০ কিট পেয়েছিলাম। তা-ও শেষ হয়ে গেছে। তাই টেস্ট বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কিট এলে আবার কার্যক্রম শুরু হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর