বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজশাহী থেকে বাড়ছে পণ্য রপ্তানি

গত এক বছরে রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৮৬ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বিশ্ববাজারে রাজশাহীর পাট, রেশম, হস্তশিল্প ও আম এখন সুপরিচিত। ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে নিবন্ধিত নয়টি পণ্যের মধ্যে রাজশাহীর রপ্তানি অঞ্চলেরই চারটি। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তির দেশগুলোয় রাজশাহীর পণ্য রপ্তানি বাড়ছে। করোনাকালে গত এক বছরে রাজশাহী থেকে শুধু পাট, হ্যান্ডিক্র্যাফট, টি-শার্ট, অ্যাগলোম্যারেটন, তাঁত ও হালকা প্রকৌশল যন্ত্রপাতি রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৮৬ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি। রাজশাহী রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা নিয়ে রাজশাহী রপ্তানি অঞ্চলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৪০ হাজার ৩০৫.৫৫ মার্কিন ডলার; যা এক বছরের ব্যবধানে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৯.৭০ মার্কিন ডলারে। রাজশাহী থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে আছে পাট ও পাটজাত পণ্য। বিভিন্ন কারণে পাটের উৎপাদনসহ ব্যবস্থাপনাগত জটিলতায় দমে যাওয়া বাজার আবারও চাঙা হচ্ছে। পাঁচ বছর ধরে পাট রপ্তানি বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ কোটি ৮৮ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৫.৭৪, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৯.৫৫ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৫২৮.১৫ মার্কিন ডলারের পাট রপ্তানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগ থেকে। বগুড়া থেকে হালকা প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, ঈশ্বরদী থেকে হোসিয়ারি পণ্য, সিরাজগঞ্জ থেকে তাঁতবস্ত্র ও পাট সবচেয়ে বেশি ভারতে এবং হ্যান্ডিক্র্যাফট ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পাটসহ অন্যান্য পণ্যের যে চাহিদা আছে তার তুলনায় রপ্তানি অনেক কম হচ্ছে। যোগাযোগের সুবিধা ও ভাষাগত কারণে পাট ও পাটজাত পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হচ্ছে পাশের দেশ ভারতে। সমস্যাগুলো দূর করা গেলে জাতীয় রপ্তানিতে রাজশাহীর অবদান বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজশাহী রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক কাজী সাইদুর রহমান জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে রাজশাহীর পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু যে পরিমাণ চাহিদা আছে তার তুলনায় কম রপ্তানি হচ্ছে। ‘সাপটা’ভুক্ত দেশগুলোয় রাজশাহীর পণ্য বেশি রপ্তানি হচ্ছে। যোগাযোগসহ পরিবহন সমস্যার কারণে আন্তর্জাতিক অন্য বাজারগুলোয় চাহিদা থাকার পরও রপ্তানি করা যাচ্ছে না। পরিবহন সমস্যার সমাধান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতরের কার্যক্রমে গতিশীলতা বৃদ্ধি পেলে রাজশাহীর রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ও পণ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি। তিনি জানান, রাজশাহী থেকে পণ্য রপ্তানির অন্যতম সমস্যা হচ্ছে পরিবহন। মধ্যপ্রাচ্যে রাজশাহীর পণ্য রপ্তানির অনেক সুযোগ আছে।

কিন্তু এখানকার একজন ব্যবসায়ীকে পণ্য রপ্তানি করতে হলে চট্টগ্রাম বা ঢাকায় নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে ব্যয় বাড়ছে। এ কারণে তারা সরকারের কাছে কার্গো বিমানের দাবি জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, পণ্য রপ্তানিতে রাজশাহীর উদ্যোক্তাদের জ্ঞানগত প্রতিবন্ধকতাও আছে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের দরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর