মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আশুলিয়ার ১৯টি সোনার দোকানে লুট

সাভার প্রতিনিধি

আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে ১৯টি সোনার দোকান একযোগে লুট করেছে ডাকাত দল। রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে আশুলিয়ার বংশী নদী তীরবর্তী নয়ারহাট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ট্রলারযোগে আসা প্রায় ১০০ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাত দল দোকানে থাকা কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারধর করে প্রায় দুই ঘণ্টা তান্ডব চালায়। বাজারে এমন দুর্র্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় হতবাক সোনা ব্যবসায়ীরা।  আরিফা গোল্ড দোকানের মালিক মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘দোকানে আমি আছিলাম। রাইত দেড়টার দিকে হইব, আমার দোকানের সামনে ছয়-সাতজন আইছে। আওয়াজ শুইনা আমি কই ক্যাডারে? তখন ওরা দ্রুত শাবল দিয়া চারা মাইরা দোকানের শাটার খুলছে। ওগো কাছে পিস্তল, রড, ছোরা আছিল। আমারে আটকাইয়া পাশের আরেকটা মুদি দোকানে নিয়া বাইন্ধা রাখছে। পরে দোকানের সিন্দুকে থাকা নগদ ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা আছিল, নিছে। সোনা আছিল ৩ ভরি ৬ আনা, ওগুলাও নিছে। ডাকাতরা শুনছি ১০০-১৫০ জন আইছিল নৌকা নিয়া’। আরেক দোকানের কর্মচারী সুবোধ রাজ বলেন, ‘রাইতে দোকানের মইদ্দেই ঘুমায়াছিলাম।

মালিক দোকানে থাকে না। ওরা ছয়-সাতজন মুখ বান্দা, কারও মাস্ক পরা আছিল। এক মিনিটের মইদ্দে দোকানের শাটার খুইলা ভিতরে ঢুকছে। আমারে বাইন্দা মারধর কইরা আরেকখানে নিয়া আটকায়া রাখছে। কতগুলা সোনা নিছে এটা কইতে পারতেছি না’। বিদ্যুৎ পাল নামে আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের বাজারে ৪০টা সোনার দোকান আছে। এর মধ্যে কাল রাতে আমার দোকানসহ ১৯টা দোকানে ডাকাতি হইছে। সব মিলায়া প্রায় ২ কোটি টাকা নাই’। বাজারের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের গা-হাত পা অবশ হয়ে আসতেছে। এর আগে কখনো এরকম ভয়াবহ গণডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। আমাদের তিনজন সিকিউরিটি রাতে পাহারা দেয়। ডাকাতরা প্রথম তাদের আটকায়া মারধর কইরা আরেকটা মুদি দোকানে বাইন্ধা রাখছিল। উনাদের ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হইছে’। আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন বলেন, ডাকাতরা বংশী নদী দিয়ে ট্রলারে এসেছিল বলে ধারণা করছি। আমাদের স্যাররা ঘটনাস্থলে এসে পরিদর্শন করছেন। অনেকগুলো দোকান লুট করেছে ডাকাতরা। তবে কী পরিমাণ সোনা লুট হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। সোনার দোকানগুলোতে কোনো সিসিটিভি নেই। তবে বাজার সড়কের পাশে একটি মিষ্টির দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাত ১টা থেকে ২টার দিকে তিনটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ৭০ থেকে ৮০ জন ডাকাত বাজারে প্রবেশ করে। এ সময় তাদের হাতে বন্দুক, পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র ছিল। তারা সিকিউরিটি গার্ড ও বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীদের বেধড়ক মারধর করে। একে একে ১৯টি দোকান থেকে প্রায় ২০০ ভরি সোনার অলংকার এবং নগদ অর্থ লুট করে। পরে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চলে যায়। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, পুরো এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লুটপাটকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন আলামত পরীক্ষা করতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৪) একটি বিশেষজ্ঞ দল মার্কেটে অবস্থান করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর