বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বরিশালে করোনা নমুনা পরীক্ষায় দুর্ভোগ

রিপোর্ট পেতে বিলম্ব ছয় জেলায় দুটি পিসিআর ল্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে করোনা নমুনা পরীক্ষায় দুর্ভোগ

বরিশালে করোনা সংক্রমণের হার কমেছে। কিন্তু কমেনি করোনা পরীক্ষায় দুর্ভোগ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে করোনা পরীক্ষা করাতে হচ্ছে তাদের। আবার নমুনা দেওয়ার পর রিপোর্ট পেতেও বিলম্ব হচ্ছে। এতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ছে। বিভাগের ছয় জেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় মাত্র দুটি পিসিআর ল্যাব হওয়ায় দূর-দূরান্তের মানুষকে চরম ভোগান্তি সহ্য করে নমুনা দিতে হচ্ছে বরিশাল এসে। ভুক্তভোগীরা নমুনা পরীক্ষা আরও সহজসাধ্য ও হাতের নাগালে করার পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আগের চেয়ে চাপ কমলেও করোনা পরীক্ষার পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের।

শিশু সন্তানের নমুনা পরীক্ষা করাতে গত সোমবার পটুয়াখালী মহিপুর থেকে বরিশাল এসেছেন গৃহবধূ মোসাম্মৎ আফরোজা। নমুনা দিতে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় গিয়েছেন মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে। কিন্তু সকাল ১০টা পর্যন্ত অফিসের দরজাই খোলেননি করোনার নমুনা সংগ্রহকারীরা। সকাল সোয়া ১০টার পর টিকিট কাউন্টার খোলার পর লাইন ধরে দাঁড়িয়ে যায় তারা। তবে শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করেননি কেউ। সেখানে অপেক্ষমাণ আকাশ, মাইনুল ইসলাম ও জাকারিয়া বলেন, নমুনা সংগ্রহে কর্তৃপক্ষের ঢিলেঢালাভাব এবং গাফিলতি আছে। সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তিদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখায় জীবাণু আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার রিপোর্ট দিতেও দেরি করে কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগীরা আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা রিপোর্ট দেওয়ার দাবি জানান।

এদিকে সিটি করপোরেশনসহ বিভাগের ছয় জেলার মধ্যে পিসিআর ল্যাব রয়েছে শুধু দ্বীপ জেলা ভোলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এবং বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে। ভোলার পরীক্ষা ভোলায় হলেও বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও বরিশাল জেলা এবং মহানগরীর মানুষের নমুনা পরীক্ষার হচ্ছে মেডিকেল কলেজের ল্যাবে। বাধ্য হয়ে চরম দুর্ভোগ সহ্য করে নমুনা পরীক্ষার জন্য বরিশাল বিভাগীয় সদরে আসতে হয় প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে। ভোগান্তি এড়াতে প্রতিটি জেলা এবং উপজেলায় করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি জানান শেরেবাংলায় নমুনা দিতে আসা পটুয়াখালীর বাউফলের বৃদ্ধ দুলাল মিস্ত্রি।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউকালীন শেরেবাংলার করোনা ওয়ার্ডে এক দিনে সর্বাধিক ৩৮০টি নমুনা সংগৃহীত হয়েছে। ওই সময় প্রতিদিন বরিশাল সিপিআর ল্যাবে নমুনা আসত ৫০০-এর বেশি। এখন চাপ কমলেও শেরেবাংলায় ৮০ থেকে ১০০টি নমুনা সংগ্রহ হয়। বিভাগের অন্য পাঁচ জেলা থেকেও বরিশাল ল্যাবে আসে প্রায় ১০০ নমুনা। আগের চেয়ে দ্রুত সময়ে রিপোর্ট পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের টেকনোলজিস্ট প্রিন্স মুন্সি।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে আরেকটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। পটুয়াখালীতেও একটি ল্যাব স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া বিভাগের সব জেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং জিন এক্সপার্ট পরীক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে করোনার নমুনা পরীক্ষার আগ্রহও কমে গেছে বলে জানান বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর