শিরোনাম
রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সিলেটে বাজেটে আছে প্রকল্প, বাস্তবায়নে নেই

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

প্রতি বছর সিলেট সিটি করপোরেশনের বাজেটে দেখানো হয় বিশাল বিশাল প্রকল্প। বরাদ্দ রাখা হয় কোটি কোটি টাকা। বিশাল বাজেটের এসব উন্নয়ন প্রকল্প দিয়ে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখানো হয় নগর বদলে দেওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু বাস্তবে কখনো আলোর মুখ দেখে না এসব প্রকল্প। কয়েক বছর পর নগর ভবন কর্তৃপক্ষ চুপিসারে বাদ দিয়ে দেন আলোচিত এসব উন্নয়ন প্রকল্প। নগরবাসীও ভুলে যান বাজেট অধিবেশনে মেয়রের দেখানো এসব স্বপ্নের প্রকল্পের কথা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সিলেট সিটি করপোরেশন ঘোষিত ৮৩৯ কোটি ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকার বাজেটে এ রকম কাল্পনিক প্রকল্পে বরাদ্দ দেখানো হয়েছে ৩৮৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা; যা মোট বাজেটের প্রায় অর্ধেক। যে প্রকল্পগুলো এর আগেও কয়েকটি অর্থবছরের বাজেটে উল্লেখ ছিল। কিন্তু প্রকল্পগুলোর কাজই শুরু হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজেটে উন্নয়ন প্রকল্প রাখা হলেও অর্থবরাদ্দ প্রাপ্তিসহ নানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত এগুলো ফিতাবন্দীই থেকে যায়। বৃহস্পতিবার সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বাজেটে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- মেয়র কাপ ক্রিকেট, ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন। এতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সিলেট সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ ও নগর ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্প দুটিতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও এ-সংক্রান্ত অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে ১৩০ কোটি টাকা। দক্ষিণ সুরমায় শেখ হাসিনা শিশু পার্ক অবকাঠামো উন্নয়ন বাবদ ২ কোটি টাকা, এসপ্লট প্লান্ট স্থাপন, ফিলিং স্টেশন নির্মাণ ও বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য জমি অধিগ্রহণ খাতে ৩৫ কোটি টাকা। তোপখানা পানি শোধনাগারের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও বোতলজাত করে বিক্রয় প্রকল্প খাতে ৩০ কোটি টাকা। দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনাল আধুনিকায়ন খাতে ৩ কোটি টাকা। সুরমা নদীর উত্তর তীর ঘেঁষে রিটেনিং ওয়াল, ওয়াকওয়েসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প খাতে ২০ কোটি টাকা। চারটি জবাইখানা ও চারটি খেলার মাঠ নির্মাণের দুটি প্রকল্পে ৮ কোটি টাকা। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের স্থায়ী অফিস স্থাপন প্রকল্পে ২ কোটি টাকা। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব উন্নয়ন প্রকল্প খাতে মার্কেট নির্মাণ ও আবাসিক প্রকল্প নির্মাণ ব্যয় বাবদ ৪৭ কোটি টাকা, বস্তি উন্নয়ন বাবদ ২ কোটি টাকা।

বিশাল এ প্রকল্পগুলো প্রতি বছরের বাজেটে রাখা হলেও কোনোটিরই কাজ শুরু হয়নি। এর মধ্যে কোনো কোনো প্রকল্প গত তিন বছর আবার কোনো প্রকল্প পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বাজেটে উল্লেখ করা হচ্ছে, কিন্তু প্রকল্পগুলো আলোর মুখ দেখছে না। ফলে বাজেট অধিবেশনে নগরবাসীকে যে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখানো হয় তা স্বপ্নই থেকে যায়।

এ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, অনেক সময় প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পগুলো যায়। পরিকল্পনা কমিশন থেকে সংশোধন-বিয়োজনের জন্য প্রকল্পগুলো রিভাইসের জন্য ফিরে আসে। এজন্য বাজেটে উল্লেখ থাকলেও অনেক প্রকল্প সময়মতো শুরু করা যায় না। অর্থ বরাদ্দের অভাবেও অনেক সময় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায় না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর