রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নির্মাণের চার বছরেই পরিত্যক্ত ইকোপার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার নন্দনপুরে সন্ধ্যা নদীর তীরে নির্মিত ইকোপার্কটি মাত্র চার বছরেই পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে ঠিকাদারের লোকজন পার্ক নির্মাণকাজে অনিয়ম করেছেন। প্রতিটি কাজে ব্যবহার করেছেন নিম্নমানের উপকরণ। যার কারণে পার্কটির অবকাঠামো বেশি দিন টেকসই হয়নি। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পুঠিয়া জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সন্ধ্যা নদীতে ক্রাসড্যাম ও তীরে ইকোপার্ক নির্মাণকাজ শুরু হয়। ভূ-উপরিস্থ সেচ কর্মসূচি প্রকল্পের অর্থায়নে কাজটি বাস্তবায়ন করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যয় করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর ইকোপার্কটি উদ্বোধন করা হয়। নন্দনপুর ইকোপার্ক ঘুরে দেখা গেছে, পরিচ্ছন্নতার অভাবে পার্কের পুরো এলাকা ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়ে গেছে। ক্রসড্যামের ওপর দর্শনার্থীদের চলাচলে নির্মিত ছোট সেতুটি ঠিক আছে। তবে শিশুদের বিভিন্ন খেলাধুলার সামগ্রী জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে। ইকোপার্ক এলাকায় স্থাপিত চারটি সোলার বাতিও দীর্ঘদিন থেকে নষ্ট। সেই সঙ্গে দর্শনার্থীদের নদীতে ঘুরে বেড়ানোর কাজে ব্যবহারের নৌকাটিও পড়ে আছে। পার্ক এলাকার পুরো নদী আগাছায় পরিপূর্ণ। পুঠিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা বলেন, সন্ধ্যা নদী খনন ও স্থানীয় চাষিদের সেচ সুবিধার্থে এখানে তিনটি ক্রসড্যাম এবং একটি বড় পরিসরে ইকোপার্ক নির্মাণকাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। পরে অর্থ সংকটের কারণে নদীতে মাত্র একটি ক্রসড্যাম ও তীরে ছোট পরিসরে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়। এ কাজের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

স্থানীয় আবু তালেব বলেন, সরকার এখানে মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। অথচ কাজ হয়েছে নামে মাত্র। তার ওপর পার্কটিতে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। এখানে শিশুদের জন্য দুটি দোলনাসহ মাত্র তিনটি খেলাধুলার উপকরণ তৈরি করা হয়। সঙ্গে একটি বসার স্থান। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেগুলো জরাজীর্ণ হতে শুরু হয়। এখন পুরো পার্ক এলাকা পরিত্যক্ত। শুরুতে এ পার্কে কিছু লোকজন এলেও গত দুই বছর থেকে এখানে আর কেউ আসে না। কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এ পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই। জামরুল আলী নামের এক চাষি বলেন, কৃষকদের সেচ সুবিধার্থে সন্ধ্যা নদীতে ক্রসড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ কিছু প্রভাবশালী নদীতে মাছচাষ করছেন। তারা খরার সময় এ নদী থেকে সেচের পানি তুলতে বাধা দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ সময় মানুষ প্রায় বদ্ধ জীবনযাপন করেছেন। এখন পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণে। পরিবার নিয়ে অনেকেই বেড়াতে বের হচ্ছেন। শুনেছি নন্দনপুর ইকোপার্কটি নানা জটিলতার কারণে কিছুটা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বরাদ্দ পেলেই পার্কের সংস্কার কাজ শুরু করব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর