সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেন সাউথ বাংলা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ

বিশেষ প্রতিনিধি

সাউথ-বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন নিজে এবং তার স্ত্রী ও কর্মচারীদের নামে কাগুজে প্রতিষ্ঠান খুলে জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে তিনি এ টাকা নিয়েছেন সেগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি বাংলাদেশে ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেওয়ার অভিযোগে গতকাল এম এম আমজাদ হোসেনসহ ব্যাংকটির ৯ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সংস্থাটির উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এদিন ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. রফিকুল ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার (এমটিও) তপু কুমার সাহা, সিনিয়র অফিসার বিদ্যুৎ কুমার ম ল, অপারেশন ম্যানেজার মোহা. মনজুরুল আলম, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার খালেদ মোশারেফ, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়াউল লতিফ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মামুনুর রশীদ মোল্লা ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

 

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার উপস্থিত সংবাদিকদের বলেন, সাউথ-বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও তা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, যা তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, আমজাদ হোসেন ঋণ নিয়েছেন যে প্রতিষ্ঠানের নামে সেই খুলনা বিল্ডার্স লিমিটেড নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি বাংলাদেশে ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ। অভিযোগ আছে, আমজাদ হোসেন নামে-বেনামে ঋণ জালিয়াতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

২০১৬ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনে এস এম আমজদ হোসেনের দুর্নীতির অভিযোগ আসে। কমিশনে আসা অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তের পর ২০১৭ সালে প্রথমবার তার বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। নামে-বেনামে ঋণ জালিয়াতি ও বিদেশে অর্থ পাচার এবং অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রাথমিক অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। দুদকের তদন্তে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেলে বিভিন্ন ব্যাংকে চিঠির মাধ্যমে তার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশ এবং তার সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেয় সংস্থাটি। পরে গত বছরের ৯ জানুয়ারি এস এম আমজাদ হোসেন, তার স্ত্রী সুফিয়া আমজাদ ও মেয়ে তাজরির আমজাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে দুদক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর