মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ীরা ফের পুরনো পেশায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ীরা  ফের পুরনো পেশায়

২০১৮ সালের রংপুর বিভাগে মাদক ব্যবসায়ীদের সাধারণ জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দিয়ে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। পুলিশ প্রশাসনের ওই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন সময়ে এই বিভাগের আট জেলায় প্রায় ৩ হাজার মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন। এদের কেউ কেউ অঙ্গীকার রক্ষা করে মাদক ছেড়ে অন্য ব্যবসায় গেলেও অনেকেই পুরনো ব্যবসা ছাড়তে পারেনি। ফলে মাদকের নিরাপদ রুটগুলো নিরাপদই রয়ে গেছে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠন হওয়ার আগে রংপুরের হারাগাছেও ছিল মাদক কেনাবেচার একটি বৃহত্তর রুট। প্রতিদিন শত শত মোটরসাইকেল আরোহী হারাগাছে যেত মাদক সেবনের জন্য। এখানে একাধিক মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। সে সময় পুলিশ বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ফলে হারাগাছে মাদক ব্যবসায় ভাটা পড়ে। ২০১৮ সেপ্টেম্বরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠন করা হলে হারাগাছ মেট্রোপলিটনের অধীনে চলে আসে। হারাগাছে অগের মতো রমরমা মাদক ব্যবসা না থাকলেও চিহ্নিত কিছু মাদক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন। ওইসব মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবী এতই বেপরোয়া যে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হত্যা করতেও ছাড়ছে না। গত শুক্রবার রাতে রংপুরের হারাগাছে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গেলে পুলিশের এএসআই পিয়ারুল ইসলাম নিহত হন। এ ঘটনায় সচেতন মহল মনে করছেন মাদকের ভয়াবহতা বন্ধ করতে না পারলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হতে পারে।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমশিনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মাদক নির্মূলে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। মাদক সেবী ও ব্যবসায়ী কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে লালমনিরহাটের মোগলহাটে প্রায় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করে সুস্থ জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন। মাদক ব্যবসায় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রুট হিসেবে পরিচিতি লালমনিরহাটের মোগলহাটের নাম পাল্টিয়ে রাখা হয় গোল্ডেন ভিলেজ। স্থানীয়রা বলছেন গোল্ডেন ভিলেজ নামকরণের যথার্থতা এখন আর নেই। অনেকেই মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।

দিনাজপুর জেলার হিলি স্থলবন্দরসহ বেশকটি সীমান্ত এলাকা ছিল মাদকের অভয়ারণ্য। দিনাজপুর তিন বছর আগে জেলা পুলিশ আহ্বানে এক হাজারের ওপর মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছে। কিন্তু এদের অনেকেই এখন আগের মতো মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর