শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধ চক্রগুলো চার ধরনের কুকর্মে তৎপর

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধ চক্রগুলো চার ধরনের কুকর্মে তৎপর

থামানো যাচ্ছে না কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অপরাধ। অপরাধী চক্রগুলো চার ধরনের কুকর্মে বেশি তৎপর। তারা প্রধানত করে থাকে চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদক ব্যবসা ও মানব পাচার। এ চক্রগুলোর পাশাপাশি রয়েছে সক্রিয় কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারে অপরাধী গ্রুপগুলো সংঘাতে জড়ায়। সংঘর্ষে নামার জন্য এরা ছুতো খোঁজে। পান থেকে চুন খসলেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে একে অন্যের সঙ্গে। বিদ্যমান গ্রুপগুলোর দ্ধন্ধের সর্বশেষ বলি জনপ্রিয় রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ মাস্টার। সামরিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলামের মতে- ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ক্ষমতার দ্ধন্ধের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধী চক্রগুলো। এ ক্ষেত্রে তারা সাধারণ রোহিঙ্গাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ক্যাম্পের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সব সংস্থার সমন্বয়ের পাশাপাশি দরকার প্রচারের মাধ্যমে অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো। সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।’ চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সব সংস্থার সমন্বয়ে কাজ করছে পুলিশ। সবার সমন্বয়ে নিয়মিত চালানো হচ্ছে অভিযান। টানা অভিযানের ফলে অনেক ক্যাম্পের অপরাধচিত্র অনেকটা নিম্নমুখী।’ কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্যমতে, গত চার বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছোট বড় আড়াই হাজারের ওপর ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে ১২ ধরনের অপরাধে প্রায় দেড় হাজার মামলা হয়েছে। এসব অপরাধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ, অপহরণ, অস্ত্র, মাদক ও মানব পাচার। এ সময়ের মধ্যে খুনের ৭৫, মাদকের ৭৮০, মানব পাচারের ৩৫, অস্ত্রের ৯৫, ধর্ষণের ৭০, ডাকাতির ১৫ এবং অপহরণ ও মুক্তিপণের মামলা হয়েছে ৪০টি। অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজারের ৩৪ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের প্রায় প্রতিটি ব্লক পরিণত হয়েছে অপরাধীদের আখড়ায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লকে সক্রিয় রয়েছে ছোট বড় কয়েক শ অপরাধী চক্র। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ ঘিরে তারা প্রায়ই দ্ধন্ধে জড়িয়ে পড়ে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তাফা বলেন, ‘ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর সময় প্রায়ই বাধার মুখে পড়তে হয়।

ক্যাম্পের মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা জড়ো হয়ে বাধা দেন। তাই স্বাভাবিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা যায় না। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এখন ক্যাম্পে অভিযান পরিচালনার সময় এপিবিএনের সহায়তা নেওয়া হয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর