রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে

এলিট ফোর্স র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, যে কোনো মূল্যে কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। যারা সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারের মাধ্যমে গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ছে, তাদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সতর্ক রয়েছে। গতকাল তেজগাঁও এফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘কিশোর গ্যাং বৃদ্ধির কারণ’ নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে র‌্যাব ডিজি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। উপস্থিত ছিলেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত প্রমুখ। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ এবং সেন্ট যোশেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের বিতার্কিকরা সমান নম্বর পাওয়ায় উভয় দলকে যৌথভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমাদের পারিবারিক বন্ধন ও পারিবারিক ঐতিহ্য সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত। সেই পারিবারিক পরিবেশ আজ গ্যাং কালচারের কারণে অনেকটাই শিথিল। তাই যেভাবেই হোক কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।

চৌধুরী মামুন বলেন, ‘আমরা যা করতে পারিনি তা এই প্রজন্মের সন্তানদের মধ্য দিয়ে দেখতে চাই। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে কোনো লজ্জাজনক পরিবেশ তৈরি না করে, সেদিকে বাবা-মাসহ সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে হবে। পারিবারিক বন্ধনের অভাবে যাতে শিশু-কিশোররা বিপথে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। প্রযুক্তি যাতে কিশোর ও তরুণদের বিপথে না নেয়, তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধ করতে হবে। তবে প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে দিলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এর ভালো দিকটা গ্রহণ করে মন্দ দিকটা পরিহার করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় করে এবং খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে কিশোরদের সুস্থ জীবন সুনিশ্চিত করতে হবে।’

জঙ্গিবাদ, জলদস্যু ও বনদস্যুদের ভয়ংকর আধিপত্য আমাদের একটি বড় সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতায় বর্তমানে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত জানিয়ে র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমন হয়েছে, জলদস্যু ও বনদস্যুরা আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূল ধারায় ফিরে এসেছে। একইভাবে গ্যাং কালচারের সঙ্গে যুক্ত কিশোরদেরও আমাদের সুস্থ সমাজে ও সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

কিশোর গ্যাং কালচার প্রতিরোধে হাসান আহমেদ চৌধুরী সাত দফা সুপারিশ করেন। সুপারিশগুলো হলো- ১. শিশু কিশোরদের সৃজনশীল কর্মকান্ডে আরও বেশি সম্পৃক্ত করে এলাকাভিত্তিক পাঠাগার, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, খেলাধুলাসহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা ২. শিশু-কিশোরদের বিপথে নিতে পারে ফ্রি-ফায়ার ও পাবজির মতো অন্যান্য কোনো অ্যাপস নিষিদ্ধ করা যায় কি না সে বিষয়ে বিবেচনা করা ৩. কিশোর অপরাধ সংক্রান্ত আইনের জটিলতা নিরসন করা ৪. রাজনৈতিক কর্মকান্ডে কিশোরদের ব্যবহার না করা ৫. পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা ৬. রাত ১০টার পর থেকে সকাল পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বন্ধ রাখা ৭. কিশোর অপরাধ সংশোধন কেন্দ্রগুলো আধুনিকায়ন করে সেখানে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর