মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
১১টির ৮টিতেই নেই প্রধান শিক্ষক

শিক্ষক সংকটে রাজশাহীর সরকারি স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর ১১টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের আটটিতেই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এই আটটির মধ্যে দুটিতে সহকারী প্রধান শিক্ষকও নেই। ফলে এ দুটি স্কুলে সহকারী শিক্ষকদের দিয়ে চলছে পাঠদান। যদিও জেলার স্কুলগুলোতে আছে সহকারী শিক্ষকেরও সংকট। জেলার স্কুলগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারীর পদ শূন্য দীর্ঘদিনের। ফলে একজন শিক্ষককে নিতে হয় পাঁচ থেকে ছয়টি করে ক্লাস। এমনিভাবেই চলছে বেশির ভাগ সরকারি মাধ্যমিক স্কুল। সেই হিসাবে শহরের কয়েকটি মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক পদ ঠিক থাকলেও আছে কর্মচারীর পদ শূন্য। সম্প্রতি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের তথ্য চেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। রাজশাহীর শিক্ষা কর্মকর্তারা সে তথ্য পাঠিয়েছেন। সূত্র জানায়, রাজশাহী নগরীর তিনটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আছেন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। এগুলো হলো রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল, পিএন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। এ ছাড়া জেলায় আটটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক। রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। একই অবস্থা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

 মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মোহনপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। এ ছাড়া ভবানিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে (বালক) প্রধান শিক্ষক নেই। তবে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক উভয়ই নেই ভবানিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং সারদা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে।

রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের (হেলেনাবাদ) প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ইসাবেলা সাত্তার জানান, ২০১৭ সালে প্রধান শিক্ষক তৌহিদ আরা বদলি হয়ে সরকারি পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যান। ফলে প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা থেকে গেছে।

গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলেও নেই প্রধান শিক্ষক। বর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষক নাজনিন আহম্মেদ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। রাজশাহী সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদটি শূন্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন শিশির কুমার উপাধ্যায়।

সারদা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ফারুক হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক পদটি প্রায় দুই বছর থেকে শূন্য। সহকারী প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার জাহান প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে তিনিও ১২ মে অবসরে যান।

বাগমারার ভবানিগঞ্জ সরকারি উচ্চ (বালক) বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনসুর রহমান জানান, ‘ছয় বছর থেকে নেই প্রধান শিক্ষক। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষকের ১১টি পদের মধ্যে আছেন ছয়জন। কর্মচারী চারজনের মধ্যে আছেন দুজন।

ভবানিগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক হিসেবে ড. রুহুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) ছিলেন। এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি বদলি হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গেছেন। বর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদও শূন্য। মোট শিক্ষকের পদ ৯টি। আছে পাঁচটি।

মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘সর্বশেষ প্রধান শিক্ষক ছিলেন এ কে এম গোলাম আযম। তিনি বদলি হয়ে যশোরে জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে স্কুলটি। সহকারী শিক্ষকের দুইটি পদ শূন্য।

রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোর শূন্য পদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। সেগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কার্যালয়ের রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ হয়নি। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষক পদের নন-ক্যাডারদের নিয়োগ হয়েছে। শিগগিরই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের নিয়োগ হবে।

সর্বশেষ খবর