রবিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে মাদরাসার জমি বিক্রি করেছেন যুবলীগ নেতা, উদ্ধারে মাঠে এমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা এলাকার একটি মাদরাসার জমি বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা আসলাম সরকার। মাদরাসা কমিটির সভাপতি দাবিদার ওই ব্যক্তি নিজে স্বীকারও করেছেন, এক সপ্তাহ আগে জমি বিক্রি করা হয়েছে। এর দলিল মূল্য দেখানো হয়েছে ৫১ লাখ টাকা। তবে এলাকাবাসী বলছেন, ওই জমির মূল্য ২ কোটি টাকার বেশি। জানাজানি হওয়ার পর এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছেন। এ ব্যাপারে গত শুক্রবার বিকালে স্থানীয় এমপি আয়েন উদ্দিন প্রতিবাদ সমাবেশ করে জমি উদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুই বিঘার কিছু বেশি ওই জমিটি ছিল পুড়াপুকুর দাখিল মাদরাসার নামে। পারিলা ইউনিয়নে যুবলীগের সাবেক সভাপতি ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মাদরাসার দুই বছর মেয়াদি কমিটির সভাপতি হয়েছিলেন। তারপর আর কোনো কমিটি হয়নি। ২০১৫ সাল থেকে এই মাদরাসার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই সুযোগে গোপনে পারিলা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম সরকার কমিটির পক্ষ হয়ে মাদরাসার ওই জমি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেন। জমি বিক্রির এ খবর জানাজানি হলে কয়েক দিন আগে এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেদিন তারা বলেছিলেন, আসলাম সরকার আগে মাদরাসা কমিটির সভাপতি ছিলেন। এখন তিনি কেউ নন। তিনি কমিটির সভাপতি সেজে জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে জমি উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন। এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, যে প্রতিষ্ঠানের কাছে জমিটি বিক্রি করা হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ফজলুল করিমের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি জমি ফেরত দিতে চেয়েছেন। মাদরাসার একটি নতুন কমিটি করা হবে। সেই কমিটির কাছে জমি হস্তান্তর করবেন তিনি। তিনি বলেন, জমি বিক্রি চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের সবাইকে আইন ও শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। জমি ফেরত নেওয়ার জন্য এমপি মাদরাসার নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এমপি আয়েন উদ্দিন আরও জানান, জমিটা যাতে দখল না হয়ে যায়, এ জন্য তিনি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও জমি বিক্রেতা আসলাম সরকার বলেন, দুই বিঘার কিছু বেশি জমি তিনি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। মাদরাসার নামে আরও এক বিঘা জমি আছে। তিনি বলেন, আমানা গ্রুপের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল, তারা নতুন করে মাদরাসাটি চালু করার ব্যবস্থা করবেন। মাদরাসায় যারা শিক্ষক ছিলেন, তারা চাকরি করতে চাইলে তাদের বহাল করা হবে। আর যারা চাকরি করবেন না, তাদের দেওয়া অনুদান ফেরত দেওয়া হবে। আসলাম সরকার বলেন, মাদরাসাটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এটি প্রতিষ্ঠার পর মাদরাসা বোর্ডের অধিভুক্ত হয়নি। শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছিলেন না বলে অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। সেটি ভালো করে পরিচালনার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এই জমি বিক্রিতে কোনো টাকা লেনদেন হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ‘আবু বকর সিদ্দিক নামের এক ব্যক্তি মাদরাসাকে জমিটি দান করেছিলেন। দানের জমি দান করা যায় না, এ জন্য একটি বিক্রয় কবলা দলিল করতে হয়েছে। মৌজা মূল্য হিসেবে জমির দামটা দেখানো হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন যে বাস্তবে জমির দাম আরও অনেক বেশি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর