সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

শিল্পকলায় মঞ্চায়ন গীতি চন্দ্রাবতী

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শিল্পকলায় মঞ্চায়ন গীতি চন্দ্রাবতী

সংস্কার নাট্যদলের প্রযোজনায় শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন হলো ইতিহাসভিত্তিক নাটক ‘গীতি চন্দ্রাবতী’। বারো দিনের গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের দশম দিন গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। নয়ন চাঁদ ঘোষের রচনায় নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ইউসুফ হাসান অর্ক। বাল্যকালে চন্দ্রাবতীর বন্ধু ও খেলার সাথী ছিল জয়ানন্দ নামের অনাথ বালক। কৈশোর উত্তীর্ণ হলে স্থির হয় বিয়ে করবে তারা। ঠিক হয় বিয়ের দিন। এরই মধ্যে জয়ানন্দ প্রেমে পড়ে মুসলিম নারী আসমানীর। জয়ানন্দ ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হয় এবং বিয়ে করে আসমানীকে। যেদিন জয়ানন্দ বিয়ে করে সেদিনই চন্দ্রাবতীর সঙ্গে তার বিয়ে হওয়ার কথা। বধূ সাজে সজ্জিত চন্দ্রাবতী জানতে পারে জয়ানন্দ অন্যত্র বিয়ে করেছে। ব্যথাতুর চন্দ্রাবতী প্রতিজ্ঞা করে কুমারী থেকে শিবের সাধনায় জীবন কাটাবে। পিতার কাছে অনুমতি চাইলে চন্দ্রাবতীকে তিনি পরামর্শ দেন রামায়ণ লেখার। চন্দ্রাবতী শুরু করে শিব স্তুতি ও সাহিত্য সাধনা। এর মাঝে কেটে যায় বেশ কিছুকাল। এক সময় জয়ানন্দ উপলব্ধি করে আসমানীর প্রতি তার টান মোহ মাত্র। প্রকৃতপক্ষে চন্দ্রবতীকেই ভালোবাসে সে। বুঝতে পারে ভুল হয়ে গেছে বড়। ভুল শোধরাতে জয়ানন্দ সন্ধ্যার দিকে এসে পৌঁছায় চন্দ্রাবতীর মন্দিরে। চন্দ্রাবতী তখন রুদ্ধদ্বার ধ্যানমগ্ন। জয়ানন্দ মন্দিরের দরজায় ডাকাডাকি করে অনেক বার, কড়াও নাড়ে। কিন্তু ধ্যান ভাঙেনি চন্দ্রবতীর। ব্যর্থ জয়ানন্দ মন্দিরের দরজায় একটি কবিতা লিখে বিদায় নেয় চিরদিনের মতো। ধ্যান ভাঙলে চন্দ্রাবতী মন্দির পরিষ্কার করার জন্য নদীর ঘাটে যায় জল আনতে। সেখানে গিয়ে দেখে, জয়ানন্দের নিথর দেহ ভাসছে নদীর জলে। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনি।

 

বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন মনামী ইসলাম কনক, বাপ্পী সাইফ, ফাতেমা তুজ জোহরা ইভা, আশিকুর রহমান, নাবা চৌধুরী, খন্দকার রাকিবুল হক, মাসুদ কবির, হুমায়রা তাবাসসুম নদী, রাকিবুল ইসলাম রাসেল, মেছবাহুর রহমান, জান্নাত তাসফিয়া বাঁধন, ইগিমি চাকমা, মোস্তফা জামান সৌরভ, উষ্মিতা চৌধুরী, নির্ঝর অধিকারী, মায়ান মাহমুদ, টুটুন চাকলাদার, মোস্তাফিজুর রহমান মফিজ, সানাউল্লা সান্টু, সেলিম রেজা স্বপন প্রমুখ।

একই সময়ে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় দৃষ্টিপাত নাট্যদলের ‘সে এক স্বপ্নের রাত’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় কথক নাট্যদলের ‘নিঃশ্বাস’।

অন্যদিকে সন্ধ্যা ৭টায় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনের সাংস্কৃতিক পর্বে ‘দেশ ছাড়া সব হারা’ শীর্ষক আবৃত্তি পরিবেশন করে বাক শিল্পাঙ্গন ও গীতি আলেখ্য ‘ঋতুরঙ্গ’ পরিবেশন করে ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী।

এর আগে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নাট্যশালার উন্মুক্ত মঞ্চের অনুষ্ঠানে পথনাটক পরিবেশন করে উত্তরীয় থিয়েটার, শিশুদের পরিবেশনায় অংশ নেয় সন্ধান লিটল থিয়েটার, দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে সাম্প্রতিক ঢাকা,  দলীয় সংগীত পরিবেশন করে পঞ্চভাস্কর ও দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে জি এ মান্নান দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর