শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মায়ের জন্মের দুই বছর আট মাস আগে মেয়ের জন্ম!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

মায়ের জন্মের দুই বছর আট মাস ছয় দিন আগে মেয়ের জন্ম হয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে বরিশালে। তবে বাস্তবে নয়, জাতীয় পরিচয়পত্রে। সেখানে মায়ের চেয়ে বেশি বয়স দেওয়া হয়েছে মেয়ে সুমি তালুকদারের। এ কারণে যৌবনেই (৩৪) তাকে অবসরে যেতে বলেছেন চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান বরিশাল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অকালে চাকরি থেকে অবসর নিতে হবে এমন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার। জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়সজনিত ভুল সংশোধনে তার স্বামী মহানগরের বরফকল বস্তির কবির তালুকদার একাধিকবার উপজেলা নির্বাচন অফিস এমনকি নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করেও ফল পাননি।

মহানগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সেবা ক্লিনিক গলির বাসিন্দা মৃত আবুল সিকদারের মেয়ে সুমি আক্তারের বিয়ে হয় ১৯৯৯ সালে। তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। এখন তার দুই ছেলে এক মেয়ে। ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হলেও ২৪ বছর সংসার করেই বয়সে বুড়ো হয়ে গেছেন তিনি। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ১৯৬২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। সে অনুযায়ী এখন তার বয়স ৫৯ বছর এক মাস ২২ দিন। অথচ তার মা মাকসুদা বেগমের জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ১৫ জুলাই। সে অনুযায়ী সুমির মায়ের বয়স ৫৬ বছর তিন মাস ২৮ দিন। অর্থাৎ মায়ের চেয়ে মেয়ের বয়স দুই বছর আট মাস ছয় দিন বেশি।

সুমী জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে তিনি নিজে কোনো ভুল করেননি। তখন জন্ম নিবন্ধন দেখিয়ে ভোটার হন। জন্মনিবন্ধনে তার জন্ম তারিখ ছিল ১৯৮৩ সালের ১ জানুয়ারি। ২০০৩ সালে তিনি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে আয়ার চাকরি নেন। সেখানে ১৯ বছর চাকরির বয়স হতেই জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স বেশি উল্লেখ থাকায় ছয় মাস পর তাকে অবসরে যেতে বলেছেন কর্তৃপক্ষ। কবির তালুকদার স্ত্রীর ‘ভুল’ বয়স সংশোধনের জন্য সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ধরনা দেন। তারা কোনো প্রতিকার না দিয়ে ‘সার্ভারে সমস্যা’, ‘স্যার নেই’সহ নানা অজুহাতে প্রতিদিনই তাকে ফিরিয়ে দেন। এরপর ১৩ ধরনের প্রমাণপত্র নিয়ে দেড় বছর আগে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের শরণাপন্ন হন। সেখান থেকে এসএসসি সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। কবির বলেন, তার স্ত্রী অষ্টম শ্রেণি পাস। তিনি স্ত্রীর বয়স সংশোধনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ টি এম শহিদুল্লাহ কবির বলেন, ‘সুমী তালুকদারের প্রকৃত জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৮৩। কিন্তু ভুলক্রমে জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখ হয়েছে ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৬২। এ ভুলের দায় নির্বাচন কমিশনের। এ ভুল সংশোধন হওয়া জরুরি।’ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, মায়ের জন্মের আগে মেয়ের জন্ম তারিখ অযৌক্তিক। এমন ঘটনা নজরে এলে কিংবা কেউ আবেদন করলে তা সংশোধন করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর