শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে নৌকার টিকিট এমপির অনুসারীদের হাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল দীর্ঘদিনের। ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যন্ত দলের নেতারা দুই ভাগে বিভক্ত। একটি অংশ স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর অনুসারী। অপর অংশের নেতৃত্বে আছেন কয়েকজন। এ অবস্থায় গোদাগাড়ীর ৯টি ও তানোরের সাত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমপির অনুসারীরাই নৌকার টিকিট পেয়েছেন। জনপ্রিয় হয়েও বর্তমানে চেয়ারম্যান আছেন এমন বক্তি বাদ পড়েছেন শুধু এমপিবিরোধী হওয়ায়। গোদাগাড়ী উপজেলায় এমপিবিরোধী বলয়ের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই সাবেক সভাপতি বদরুজ্জামান রবু মিয়া ও মো. বদিউজ্জামান এবং কাঁকনহাট পৌরসভার মেয়র এ কে এম আতাউর রহমান খানসহ কয়েকজন। তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের এমপিবিরোধী বলয়ের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন। তাদের অনুসারীদের কেউ ইউপি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাননি। তানোর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টিতে চেয়ারম্যানরা মনোনয়ন পেয়েছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান হওয়ার পরেও এমপিবিরোধী হওয়ায় কামারগাঁ ইউনিয়নে মনোনয়ন পাননি মসলিম উদ্দিন। সেখানে দেওয়া হয়েছে ফজলে রাব্বী মিয়াকে। গোদাগাড়ী সদর ইউপিতে মাসিদুল গনি, মোহনপুরে খাইরুল ইসলাম, পাকড়ীতে মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, রিশিকুলে শহিদুল ইসলাম, গোগ্রামে মজিবর রহমান, মাটিকাটায় শহিদুল করিম শিবলী, দেওপাড়ায় বেলাল উদ্দিন সোহেল, বাসুদেবপুরে শফিকুল ইসলাম এবং চর আষাড়িয়াদহে মো. শহীদুল্লাহ মনোনয়ন পেয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

চর আষাড়িয়াদহে মনোনয়ন পাওয়া মো. শহীদুল্লাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন ধরে অসুস্থ। তার ছেলে নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আব্বু তো মনোনয়ন চাননি। কোথাও বায়োডাটাও জমা দেননি। তিনি কীভাবে মনোনয়ন পেলেন, সেটা আমরাও বুঝতে পারছি না। মনোনয়ন পেলেও তার নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমরা আব্বুর জন্য দোয়া চাই।’

এলাকায় এমপিবিরোধী হিসেবে পরিচিত দেওপাড়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আক্তার। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা দেওপাড়ার চারবারের চেয়ারম্যান। এলাকায় জনপ্রিয়ও। তার পরও মনোনয়ন পাননি। এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা যুবলীগের কোষাধ্যক্ষ বেলাল উদ্দিন সোহেল।

ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আক্তার বলেন, ‘আমি চারবারের চেয়ারম্যান। কেউ আমার কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি দেখাতে পারবে না। তা-ও মনোনয়ন পেলাম না। কেন্দ্রকে ভুল বুঝিয়েই আমাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে।’

আখতারুজ্জামান বলেন, ‘শুনেছি, এমপির বাড়িতে বসে তালিকা কাটছাঁট হয়েছে। রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘মনোনয়ন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যাদের যোগ্য মনে করেছেন, তিনি তাদেরই নৌকা দিয়েছেন।’

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকার বলেন, তালিকা করা হয়েছে তা বলতে পারব না। তবে যে তালিকা এসেছিল, তাতে আমরা সুপারিশ করেছি।’

সর্বশেষ খবর