শিরোনাম
বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

দুদকের জালে রাঘববোয়ালরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও খুলনা

খুলনায় স্বাস্থ্য খাতে সিন্ডিকেট, চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় বাণিজ্যসহ দুর্নীতিতে জড়িত রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই মধ্যে সিন্ডিকেটের মূল দুই হোতা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের স্টেনোগ্রাফার ও সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি ওষুধ পাচারে জড়িত নার্স-ফার্মাসিস্টদের বিরুদ্ধে মামলা ও জেনারেল হাসপাতালে ল্যাব ইনচার্জ টেকনোলজিস্টের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের তদন্ত শুরু হয়েছে। দরপত্র বাণিজ্যে ও দুর্নীতিতে সাবেক দুজন সিভিল সার্জনের নাম তালিকায় রয়েছে।

জানা যায়, গতকাল ১ কোটি ১১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস ও খুমেক হাসপাতালের সাবেক হিসাবরক্ষক গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মহানগর বিশেষ আদালতে পিপি ও দুদক আইনজীবী খন্দকার মজিবর রহমান জানান, দায়িত্বে থাকাকালে গোলাম কিবরিয়া বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২৭/১ ও মানি লন্ডারিং আইনে ২০১২ সালের ৪ (২) ধারায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। শুনানি শেষে গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেফতারের জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দুদকের আরেক মামলায় বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের  স্টেনোগ্রাফার ফরিদ আহমেদ ও তার স্ত্রী পলি আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ফরিদ আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে জেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি, প্রমোশন নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মুজগুন্নি আবাসিক এলাকায় বিলাসবহুল বাড়ি, নগরীর বয়রা এলাকায় তার স্ত্রীর নামে ক্রোকারিজের দোকান ‘মেসার্স পলি এন্টারপ্রাইজ’সহ অবৈধ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সস্ত্রীক স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা : ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৭৬৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির উপ-পরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলামের স্ত্রী সৈয়দা তামান্না শাহেরীন ও সৈয়দ হাসান শিবলী। মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলামের নামে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় ১৪টি এফডিআরে ৮ কোটি টাকা এবং যমুনা ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখায় ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩৭ টাকা জমার তথ্য পায় দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে তার স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ৮ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে সরকারি চাকরির আগের সঞ্চয় ও চাকরিকালীন সঞ্চয়সহ অন্যান্য আয় মিলিয়ে ২ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ৯৩৭ টাকার গ্রহণযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে ৬ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৭৬৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সমাজ কল্যাণ পরিষদে অভিযান : দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় সমাজ কল্যাণ কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া কভিড-১৯ টিকাদান প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লার একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। গতকাল এই অভিযান চালানো হয়। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক জানান, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ও দরিদ্রদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর