বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাড়াটে খুনিদের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই

-প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভাড়াটে খুনিদের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই

হায়ার কিলারদের (ভাড়াটে খুনি) আমরা ছাড়ি না। এসব খুনিদের বিষয়ে আমাদের কোনো ছাড় নেই। দেশে ভাড়াটে খুনি পাওয়ার বিষয়টি বিপজ্জনক। ১৪ বছর আগে ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্ত্রী হত্যা মামলার আসামি ভাড়াটে খুনি মিজানুর রহমানের আপিল শুনানির সময় গতকাল এমন মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। পরে আদালত আসামি মিজানুর রহমানের আপিল খারিজ করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড বহাল রাখে। আদালতে মিজানুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুহাম্মদ আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আইনজীবী মুহাম্মদ আশরাফ আলী বলেন, ‘তাহমিনা শারমিন তানিয়া হত্যা মামলায় তার স্বামী জাহিদ হাসান জুয়েল, শাহিন আলম শাহিন ও মিজানুর রহমানকে বিচারিক আদালত ফাঁসির আদেশ দেয়। পরে সেটি হাই কোর্টও বহাল রাখে। এরপর আমরা মিজানুর রহমানের পক্ষে আপিল করলে শুনানি শেষে মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছে আপিল বিভাগ।

এখন পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে ক্লায়েন্ট চাইলে রিভিউ করব।’

এ মামলার আরেক আসামি নিহত তানিয়ার স্বামী জাহিদ হাসান জুয়েলের মৃত্যুদন্ড ২০১৭ সালে বহাল রাখে আপিল বিভাগ। এ ছাড়া গাড়িচালক শাহিনের জেল আপিল শুনানির জন্য আজ আপিল বিভাগের তালিকায় আসবে।

মামলাসূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ২৭ জানুয়ারি স্ত্রী তানিয়াকে নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে যান জাহিদ। ৩০ জানুয়ারি সেখান থেকে ফেরার পথে রাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রাজপাড়ায় গাড়িটি স্বামী জাহিদের পাতানো ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। ছিনতাইকারী সেজে ভাড়াটে খুনি মিজান, স্বামী জাহিদ ও গাড়িচালক শাহিন গাড়ির ভিতর তানিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিতের পর ১০ মাসের শিশু সন্তানসহ তাকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যান আসামিরা।

মামলায় বলা হয়েছে- ঘটনাস্থলে তারা কাশেম নামে একজনের ভুয়া পরিচয়পত্র ফেলে রেখে যান। পরে স্থানীয়রা তানিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরদিন ৩১ জানুয়ারি তানিয়ার ভাই রায়হান গফুর বাদী হয়ে জাহিদ ও কাশেমের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও দুজনকে আসামি করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০ এপ্রিল পুলিশ জাহিদ, শাহিন ও মিজানের নামে অভিযোগপত্র দেয়। এর মধ্যে আসামিরা গ্রেফতার হয়ে ঘটনার বিষয়ে জবানবন্দি দেন।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ আদালত তিন আসামিকে মৃত্যুদন্ড দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাই কোর্টে আপিল করেন। আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০১২ সালের ৮ জুলাই হাই কোর্টও তিনজনের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখে। এরপর জাহিদ ও মিজানুর রহমান আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আর শাহিনের জেল আপিল হয়।

সর্বশেষ খবর