প্রবাসে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বছরের পর বছর ধরে কষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে দীর্ঘদিন পর দেশে পাড়ি জমান প্রিয়জনের কাছে। কিন্তু দেশের মাটিতে পা রাখতে না রাখতেই তাদের কাউকে না কাউকে হারাতে হয়েছে সহায় সম্বল। শাহজালাল বিমানবন্দরকেন্দ্রিক একদল ডাকাত সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কারের চালক সেজে বসে থাকত বিমানবন্দরের বাইরে। প্রবাসী দেখলেই তাদের প্রয়োজনে কম বাড়ায় অটোরিকশায় তুলত। পরে সুবিধা মতো জায়গায় নিয়ে হাত-পা বেঁধে সর্বস্ব লুটে নিত চক্রটি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকেন্দ্রিক সক্রিয় ডাকাত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতারের পর এমনটি জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, চক্রটি ডাকাতির জন্য ভোর রাতে আসা প্রবাসীদের টার্গেট করত।
প্রবাসীদের কেউ কেউ বুঝতে না পেরে ডাকাত চক্রের গাড়িতে উঠত, অন্য গাড়িতে উঠলেও পথে ওতপেতে থাকা চক্রের সদস্যরা গাড়ি থামিয়ে সব লুটে নিত।বুধবার ঢাকা, মাদারীপুর ও ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- তৈয়ব আলী, মিলন সরদার, মোছা. রীমা আক্তার হ্যাপি, মো. মনির হোসেন ও বিপুল দেবনাথ। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি ওয়্যারলেস, একটি হ্যান্ডকাফ, ২৩ হাজার টাকা ও লুট হওয়া ১ কেজি ৩৬৩ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের টার্গেট করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান করত ডাকাত দলটি। এ দলের সদস্যরা কখনো চালক সেজে প্রবাসীদের নিজেদের গাড়িতে তুলত, কখনো প্রবাসীদের ভাড়া করা গাড়ি ফলো করত। সুবিধা মতো জায়গা পেলেই ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা প্রবাসীর গাড়ি এসে ঘিরে ধরত। পরে হাত-পা বেঁধে লুট করে নিত টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার।
সম্প্রতি প্রবাসী রাসেল ও সাইফুল কাওলা বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশায় গাবতলী যাচ্ছিলেন। আবদুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ রোডে সিলভার রঙের একটি গাড়ি তাদের অটোরিকশার গতিরোধ করে। পরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার তদন্তে ডাকাত দলের এই সদস্যদের তালিকা বের হয়ে আসে।