শনিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আরও জনবান্ধব করতে সিএমপির অভিনব উদ্যোগ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা। ফারজানা আকতার (ছদ্মনাম) নামে এক তরুণী থানায় আসেন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করতে। ওই তরুণী থানায় আসার সঙ্গে সঙ্গে ‘সার্ভিস ডেলিভারি সেন্টার’র দায়িত্বরত কর্মকর্তা ভুক্তভোগী তরুণীকে প্রথম পানি এবং কফি দিয়ে অ্যাপায়ন করেন। এরপর শোনেন অভিযোগ। অভিযোগ গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য ওই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কে। চিত্রটি বাইরের কোনো দেশের পুলিশ স্টেশনের মনে হলেও এমন পুলিশিং কার্যক্রম চালু করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এটি পাঁচলাইশ মডেল থানায় চালু করলেও পরবর্তীতে প্রত্যেক থানায় নতুন ধরনের এ পুলিশি কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে সিএমপির। সিএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ‘সেবার মান আরও বৃদ্ধির জন্য পাঁচলাইশ থানাকে ভিন্ন ধাঁচে সাজানো হয়েছে। চালু করা হয়েছে কিছু সার্ভিস। পরবর্তীতে নগরীর সব থানায় একই ধাঁচে সাজানো হবে।’ পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহেদুল কবির বলেন, ‘সেবার মান বৃদ্ধির জন্য সিএমপির কমিশনার কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। ওনার নির্দেশ মতো ইউরোপের পুলিশ স্টেশনের ধাঁচে সাজানো হয়েছে পাঁচলাইশ থানাকে। একই সঙ্গে সেবার মান বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।’ জানা যায়, বহির্বিশের বিভিন্ন দেশের পুলিশিং কার্যক্রমের মতো আরও জনবান্ধব করতে সিএমপিতে নেওয়া হয়েছে অভিনব উদ্যোগ। এ উদ্যোগের পাইলট প্রকল্প হিসেবে পাঁচলাইশ থানাকে সাজানো হয়েছে ইউরোপ আমেরিকার পুলিশ স্টেশনের ধাঁচে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে স্বচ্ছ কাচ দিয়ে। প্রত্যেক কর্মকর্তার জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা আলাদা ডেস্ক। যাতে প্রত্যেক জনের জন্য রয়েছে কম্পিউটার। আসামিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিজ্ঞানসম্মত হাজতখানা।

তৈরি করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কর্নার, নারী ও শিশু ডেস্ক, প্রতিবন্ধী ডেস্ক। থানায় সেবাগ্রহীতাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে সার্ভিস ভেলিভারি সেন্টার। এ সেন্টারে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেবাগ্রহণকারীদের পানি এবং কফি দিয়ে অ্যাপায়ন করা হয়। এরপর অভিযোগ শুনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়।

পাঁচলাইশ কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি আবু সায়েদ সেলিম বলেন, ‘পুলিশিং সেবার মান বৃদ্ধির জন্য পাঁচলাইশ থানা পুলিশ যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। সিএমপির প্রত্যেক থানার সেবা এভাবে হওয়া উচিত।’

সেবাগ্রহীতা ফারজানা আকতার (ছদ্মনাম) বলেন, ‘থানায় সেবাগ্রহণকারীদের পানি ও কফি দিয়ে অ্যাপায়ন, এরপর সেবা প্রদান- এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। দেশের প্রত্যেক থানার চিত্র এটাই হওয়া উচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর