সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মনোরোগ প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পারিবারিক, বৈবাহিক, সামাজিক, কর্মজীবন নিয়ে মানুষের মানসিক সমস্যা বাড়ছে। এতে ধীরে ধীরে বাড়ছে মনোরোগ। রোগী বাড়লেও আমাদের দেশে মনোরোগ চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। সরকারিভাবে মাত্র দুটি হাসপাতাল রয়েছে মানসিক রোগীদের চিকিৎসায়। তাই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করার এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার এটাই সময়।

গতকাল ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’ সংগঠনের তিন বছর পূর্তিতে আয়োজিত আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে ‘পরিবর্তন’। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শম্পা রেজা। অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন অ্যান্ড কাউন্সিলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেটস টক মেন্টাল হেলথ সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আনুসা চৌধুরী। বক্তব্য দিয়েছেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাত। সংগঠনের তিন বছর পূর্তিতে কেক কেটে উদযাপন করেন অতিথিরা। এ সময় অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন আয়োজকরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সভ্যতার শুরুতে মানুষ সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হতো। ওষুধ, টিকায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়া শুরু হয়। হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস বাড়তে শুরু করে। এখন মনোরোগ জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তরুণরা হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। এ জন্য অভিভাবক, পরিবার, সমাজ সবাইকে সচেতন হতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে মনোরোগ চিকিৎসায় সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্ট সংকট রয়েছে। সমস্যা সমাধানে ও প্রতিরোধে আমরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব। হতাশা ঝেড়ে ফেলে সবাইকে ভালো থাকতে হবে, সমাজকেও ভালো রাখার চেষ্টা করতে হবে।

শম্পা রেজা বলেন, ‘হতাশা মানুষের জীবনকে স্থবির করে দেয়। তাই নিজেকে ভালো রাখতে মনকে প্রস্তুত করতে হবে। হতাশাগ্রস্ত হয়ে মানুষ নিজেকে একা    করে ফেলে। মনকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে, হতাশা ঝেড়ে জীবনে এগিয়ে যেতে হবে। মানুষ খুশি থাকতে শিখলে মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। শিক্ষাব্যবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি সংযুক্ত করা জরুরি। এতে জীবনের বাঁকে দেখা দেওয়া হতাশাকে সামলাতে পারবে আগামী প্রজন্ম।’

ড. মেহতাব খানম বলেন, ‘মানসিক ডিজওর্ডার নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের সাইকোথেরাপি এবং কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। মনোরোগে আক্রান্ত রোগীদের পাগল বলে বুলিং না করে মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। দেশে সরকারিভাবে মাত্র দুটি মানসিক হাসপাতাল আছে। একটি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং আরেকটি পাবনা মানসিক হাসপাতাল। মনোরোগ চিকিৎসায় রয়েছে চিকিৎসক সংকট। দেশে সাইকিয়াট্রিস্ট আছেন ৩০০ জন এবং সাইকোলজিস্ট আছেন ৫০০ জন। মানসিক স্বাস্থ্যকে অবহেলা না করে প্রতিরোধ করতে মনোযোগী হতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর