শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রথম ও দ্বিতীয় এজাহার নিয়ে নানা প্রশ্ন

কোন পথে মিতু হত্যা মামলা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। দেশ তোলপাড় করা এ হত্যা মামলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ এবং দ্বিতীয় মামলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। তবে চট্টগ্রাম বারের আইনজীবীদের দাবি, বাবুল আকতার বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার চার্জশিটে তাকে আসামি করার সুযোগ রয়েছে এখনো। একই মামলায় দুই এজাহারকে টেকনিক্যাল ত্রুটি হিসেবে দেখছেন তারা। চট্টগ্রাম বারের সিনিয়র আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘মামলার তদন্তে বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে প্রথম মামলায় তাকে গ্রেফতার করা যেত। দ্বিতীয় এজাহার দায়েরের প্রয়োজন ছিল না। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় অতীতেও বাদীকে আসামি করার নজির রয়েছে। একই মামলায় দুই এজাহারের কারণে মামলার ভিত কিছুটা নষ্ট হয়েছে। এতে করে বিশেষ সুবিধা পাবে আসামি পক্ষ।’ তিনি বলেন, ‘তদন্তকালে বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় প্রথম মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর সুযোগ রয়েছে এখনো। কিন্তু তা এখনো করা হয়নি। প্রথম মামলার চার্জশিট দেওয়ার আগে পিপির মতামত নেওয়া হলে দ্বিতীয় এজাহার দায়েরের যে টেকনিক্যাল ত্রুটি হয়েছে তা এড়ানো যেত।’

চট্টগ্রাম বারের সিনিয়র আইনজীবী রেজাউল করিম রনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে কোনো ঘটনার সঙ্গে বাদীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে সেই মামলাতেই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হবে। আলাদা করে মামলা দায়েরের প্রয়োজন নেই। একই সঙ্গে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে বাদীকে আসামি বানানোর জন্য এজাহারের দরকার নেই।’  

গত ৩ নভেম্বর আদালতের দেওয়া অধিকতর তদন্তের আদেশে বলা হয়, একটি সফল তদন্ত যার মাধ্যমে মামলার খুনের মোটিভ এবং আসামি শনাক্ত হয়েছে। দুজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি এবং গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ হয়েছে। একটি সফল তদন্তের পরিসমাপ্তি টেকনিক্যাল তুচ্ছ কারণে ব্যর্থ করে দেওয়া উচিত হবে না। এ মামলায় অধিকতর তদন্ত করে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করলে তাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং পরবর্তী আইনি জটিলতা এড়ানো সম্ভব হবে।

মামলার বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মিতু হত্যা প্রথম মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আগে আমার কাছ থেকে কোনো মতামত গ্রহণ করা হয়নি।’

২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের পাঁচ বছর পর পিবিআইর তদন্তে এ খুনের সঙ্গে বাবুল আকতারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে। তাই পুরনো মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এরপর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নতুন করে মামলা দায়ের করেন। যাতে আসামি করা হয় বাবুল আকতারসহ আটজনকে। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে বাবুল বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। পিবিআইর চূড়ান্ত প্রতিবেদনের আপত্তি জানিয়ে ১৪ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন বাবুল। ২৭ অক্টোবর নারাজির আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে ৩ নভেম্বর মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন এবং বাবুল আকতারের নারাজি আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর