মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ শাহান আরাকে দুদকে তলব

বিশেষ প্রতিনিধি

ভর্তি বাণিজ্য ও ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহিভর্‚ত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ শাহান আরাকে আগামী ১৫ নভেম্বর দুদক প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য নোটিস জারি করা হয়।

এদিকে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গতকাল অভিযান পরিচালনা করেছে দুদকের অপর একটি টিম।

ড. শাহান আরা বেগমকে দেওয়া নোটিসে আরও বলা হয়েছে, তিনি যদি নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হন, তবে অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য হবে। এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ ড. শাহান আরার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়। যার অধিকাংশ নথিপত্র দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ থাকাকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালে মতিঝিল শাখায় এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণেরও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া টেস্ট পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে পারেনি, তাদের কাছ থেকে প্রতিটি বিষয়ের জন্য ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করে ফরম পূরণের সুযোগ দেন এ অধ্যক্ষ। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল শাখা, বনশ্রী ও মুগদা শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

২০১৯ সালের মে মাসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র ঘষামাজা করে নম্বর দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড।

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিশেষ ক্লাসের নামে বাধ্যতামূলক টাকা আদায়ের অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় অভিযান চালায় দুদকের একটি দল।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার ও উপ-সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত দল অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। ওই সময় অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত জব্দ করে দুদক।

এ বছরের ২৯ আগস্ট দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। যদিও অভিযুক্তের দাবি, তার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।

প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে গতকাল অভিযান পরিচালনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদক টিম সরেজমিন নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন করে। এ সময় টিম কাজের মান যাচাই করে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে। এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগ প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে এবং প্রকল্পের নথিপত্র সংগ্রহ করে। ভবন নির্মাণের পূর্বে ফিজিবিলিটি টেস্ট করা হয়নি বলে জানতে পারে দুদক টিম। অভিযানে প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণ যাচাইপূর্বক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর