সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আগেভাগে নির্বাচনী প্রস্তুতি সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগে

সিটি ও সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দল সংগঠিত করার উদ্যোগ, নয়টি সাংগঠনিক কমিটি চারটি সেল গঠন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর, আর জাতীয় সংসদের বাকি প্রায় দুই বছর। নির্বাচন দূরে থাকলেও আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। দুই নির্বাচনে যাতে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করা যায় সে লক্ষ্যে আগাম প্রস্তুতি শুরু করেছেন সংগঠনটির নেতারা। দলকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে গঠন করা হয়েছে ৯টি সাংগঠনিক উপকমিটি ও চারটি সেল। দলের নেতারা বলছেন, সাংগঠনিক এই তৎপরতার ফলে নেতা-কর্মীরা চাঙা হবেন, গতি আসবে সাংগঠনিক কাজে। গেল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ের দহন এখনো পোড়াচ্ছে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। নির্বাচনের পর সাংগঠনিক দুর্বলতা ও প্রার্থীর বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্তের কথা উঠে আসে। তবে গেলবার যে কারণেই দলীয় প্রার্থীর পরাজয় হোক না কেন, আগামীতে কোনোভাবেই এর পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না দলের নেতা-কর্মীরা। তাই নির্বাচনের দেড় বছর আগেই দলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন তারা।দলীয় সূত্র জানায়, ৬ নভেম্বর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলকে আরও সুসংগঠিত করতে ৯টি সাংগঠনিক উপকমিটি ও চারটি সেল গঠন করা হয়। ২৭টি ওয়ার্ডকে ৯টি ভাগে ভাগ করে, অর্থাৎ প্রতি তিন ওয়ার্ডের জন্য গঠন করা হয় একটি উপকমিটি। ওই উপকমিটির সদস্যরা তাদের অধীনস্থ ওয়ার্ডগুলোর সাংগঠনিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন। পাশাপাশি সংগঠনকে গতিশীল করা, কোন্দল নিরসন করে ঐক্য স্থাপন ও নিষ্ক্রিয় থাকা নেতা-কর্মীদের চাঙা করতে কাজ করবেন তারা। মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাগুলোতে উপকমিটিগুলো তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমের অবস্থা তুলে ধরবেন। এ ছাড়া সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে প্রচার, দফতর, তথ্য ও অর্থ বিষয়ক সেল গঠন করা হয়েছে। এসব সেলের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলো জনসাধারণের কাছে তুলে ধরে জনমত তৈরি করবেন তারা, যাতে এর ইতিবাচক প্রভাব আগামী সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পড়ে। গঠিত উপকমিটি ও সেলের সমন্বয়কারী এবং নির্দেশক হিসেবে কাজ করবেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে অনেকটা স্থবিরতা নেমে এসেছে। রাজপথের কর্মসূচি না থাকায় বিভিন্ন দিবসকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কর্মকান্ড। এ অবস্থায় সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল ও ঝিমিয়ে পড়া নেতা-কর্মীদের চাঙা করতে মহানগর আওয়ামী লীগ এ উদ্যোগ নেয়।

উপকমিটি ও সেল গঠনের পর থেকে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও চাঙা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের একাধিক নেতা।

উপকমিটি ও সেল গঠন প্রসঙ্গে জানতে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে উপকমিটি ও সেলের কাজ কী হবে এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে কিছু বলা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সামনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। নির্বাচন দুটিতে আমরা দলীয় প্রার্থীর বিজয় দেখতে চাই। তাই আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন দল ক্ষমতায় থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা স্থবিরতা চলে এসেছে। এ উদ্যোগের ফলে তারাও চাঙা হবেন। ওয়ার্ড পর্যায়েও দলীয় কার্যক্রম গতিশীল হবে। সব মিলিয়ে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আগামী নির্বাচনে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর